Published : 11 Jul 2023, 07:03 PM
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলায় এই আইসোলেশন ওয়ার্ডের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির ডেঙ্গু ইউনিটের ফোকাল পারসন ডা. ফরহাদ হোসেন হীরা।
এ মুহূর্তে সেখানে এক শিশুসহ ২৭ জন চিকিৎসাধীন।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে আসমা বেগম (৫০) নামে ডেঙ্গু আক্রান্ত চিকিৎসাধীন এক নারীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে চলতি মাসে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই রোগে তিনজনের মৃত্যু হলো।
ডা. ফরহাদ হোসেন হীরা জানান, মৃত আসমা বেগম কিশোরগঞ্জের কমিরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। তবে তিনি ঢাকায় বাস করতেন। বেশ কয়েকদিন আগেই তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। দ্রুত তার চিকিৎসা শুরু হলেও সাড়ে ৫টার দিকে তিনি মারা যান।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি বেশিরভাগ রোগীই ঢাকা, নারায়াণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে আক্রান্ত হয়ে ময়মনসিংহে এসেছেন বলেও জানান এই চিকিৎসক।
টানা কয়েকদিন জ্বর, সর্দি এবং ঠান্ডার সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন ডেঙ্গু ইউনিটের এই ফোকাল পারসন।
তিনি বলেন, “দ্রুত যোগাযোগ না করলে ডেঙ্গুর সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া খুব কঠিন। বর্তমানে হাসপাতালে যে কয়েকজন ভর্তি রয়েছেন তাদের অবস্থা মোটামুটি ভালো। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসাধীন সব রোগীকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই ওয়ার্ডটির আওতা আরও বাড়ানো হবে।”
আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার বাসিন্দা হযরত আলী বলেন, “ঢাকা থেকে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার পর প্রথমে জ্বর আসে। পরে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর জানতে পারি ডেঙ্গু হয়েছে। এরপরই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।”
একই ওয়ার্ডে ভর্তি জামালপুরের অজয় রায় বলেন, “ডেঙ্গু শরীরের অবস্থা একেবারেই দুর্বল করে ফেলেছে। হাসপাতালে সবসময় চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন। সেই অনুযায়ী চলছি।”
অন্যদিকে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে চালু করা হয়েছে ক্রাশ প্রোগ্রাম।
সকালে নগরীর প্রিমিয়ার আইডিয়াল হাই স্কুল প্রাঙ্গণে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু।
তিনি বলেন, “সিটি করপোরেশন এলাকায় এখনও ডেঙ্গুতে কেউ আক্রান্ত হয়নি। তবে সারাদেশে যেভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে তা মাথায় নিয়ে উড়ন্ত মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম চলবে। প্রতিদিন ৩৩টি ওয়ার্ডে সকাল-বিকাল মশা নিধনে কাজ করা হবে।”
সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি স্কুল-কলেজে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।