Published : 06 Jan 2024, 11:58 PM
ফুটবলের রাজা পেলে খুব স্বাভাবিকভাবে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলেও এক ‘অদ্বিতীয়’ নাম। তারকাখ্যতিতে তার সমান্তরালে হয়তো আর কাউকেই কেউ রাখতে চাইবেন না। তবে ফুটবলীয় মেধা আর মাঠের রণকৌশল সাজানোয় পটু মারিও জাগালোকে খুব কি পেছনে রাখা যায়? দেশটির আরেক বিশ্বকাপ জয়ী নায়ক রোমারিও যেমন, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে ‘গুরুত্ব আর প্রভাববিস্তারী’ ব্যক্তিত্বের প্রশ্নে পেলে-জাগালোকে এক কাতারেই দেখেন।
ফুটবল ময়দানে জাগালোর গুরুত্ব আর অবস্থান তুলে ধরতে এই কিংবদন্তিকে ফিফা তুলনা করেছেন কালজয়ী মার্কিন অভিনেতা ও পরিচালক ক্লিন্ট ইস্টউডের সঙ্গে। জাগালোও যে একই সঙ্গে খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে বিশ্ব জয় করেছেন।
বিশ্ব ফুটবলে একমাত্র দেশ হিসেবে পাঁচবার বিশ্বকাপ জিতেছে ব্রাজিল। তাদের এই অতুলনীয় যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপ দিয়ে। সুইডেনের ওই আসরের এক মাস আগেও ব্রাজিল জাতীয় দলের কেউ ছিলেন না জাগালো।
সেখান থেকে হঠাৎ করেই ব্রাজিলের তখনকার কোচ ভিসেন্তে ফিয়োলার নজরে আসেন জাগালো এবং জায়গা করে নেন বিশ্বকাপ দলে। শুরু হয় ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে জাগালো নামের রূপকথার।
ওই বিশ্বকাপের ফাইনালে নিজে গোল করার পাশাপাশি পেলের গোলেও অবদান রাখেন জাগালো। পরের বিশ্বকাপে শিরোপা ধরে রাখা দলেরও গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন তিনি।
১৯৭০ সালে তার কোচিংয়েই ব্রাজিল জেতে আরেকটি শিরোপা। পেলে, জাইরজিনিয়ো, রিভেলিনো, তোস্তাওদের সেই দলকে মনে করা হয় ফুটবল ইতিহাসের সেরা দল। জন্ম দেন অনন্য এক কীর্তির; ফুটবলার ও কোচ, দুই ভূমিকায় বিশ্বকাপ জয়।
এরপর ২৪ বছরের খরা ঘুচিয়ে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে আবারও বিশ্বসেরার মুকুট মাথায় তোলে ব্রাজিল, সেই দলের সহকারী কোচ ছিলেন জাগালো। তাকে একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে চারটি বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পান তিনি। এরপরেও স্বদেশের জাতীয় দলের সঙ্গে কয়েক দফায় জড়িয়ে ছিলেন জাগালো।
সাফল্যে ভরপুর, তারকা খচিত এই ফুটবল গ্রেট ৯২ বছর বয়সে শনিবার পাড়ি দিয়েছেন না ফেরার দেশে।
২০২০ সালে ফিফাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের উঠে আসা, পজিশন বদল, বিশ্বকাপের আগে চোট শঙ্কায় পড়া, হঠাৎ করেই জাতীয় দলের দায়িত্ব পাওয়া থেকে শুরু করে আরও অনেক বিষয় নিয়ে মন খুলে কথা বলেছিলেন জাগালো। বৈশ্বিক ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা কিংবদন্তির স্মৃতিচারণই করেছে সাক্ষাৎকারটি পুনরায় ছাপিয়েছে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো পুরোটা।
ফিফা: মিস্টার জাগালো, আপনি নাম্বার-১০ হিসেবে শুরু করেছিলেন এমন একটা দেশে, যেখানে অসাধারণ নাম্বার-১০ ভুরিভুরি। বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাওয়াটা কি আপনাকে লেফট-উইঙ্গারে রুপান্তর হতে বাধ্য করেছিল?
জাগালো: হ্যাঁ, সেটাই হয়েছিল। বিশ্বকাপে সেলেসাওদের হয়ে খেলার স্বপ্ন আমি সবসময় দেখেছি। ১৯৫০ বিশ্বকাপে আমি মারাকানায় ছিলাম (ব্রাজিল-উরুগুয়ের ম্যাচে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে ছিলেন ওই সময়ের সৈনিক জাগালো)। আমেরিকায় আমি নাম্বার-১০ হিসেবে শুরু করেছিলাম; ১৯৫০ সালে যখন ফ্লামেঙ্গোতে এলাম, ভাবনা ছিল একদিন বিশ্বকাপ খেলব। তখন সিদ্ধান্ত নেই আমি উইঙ্গার হবো এবং তখনই আসলে আমার ক্যারিয়ার শুরু হলো।
ফিফা: ১৯৫৮ সালের সুইডেন বিশ্বকাপের একমাস আগেও আপনি ব্রাজিলের হয়ে খেলেননি। সেই আপনি শুধু বিশ্বকাপ খেলতে গেলেনই না, ব্রাজিলের শুরুর একাদশে লেফট-উইঙ্গার হিসেবে জায়গাও পেয়ে গেলেন, কিভাবে?
জাগালো: (নিজের প্রতি) বিশ্বাস ছিল। বোতাফেগোর ম্যাচ ছিল মারাকানায় এবং ফিটনেস ট্রেনার পাওলো আমারাল এসে আমাকে বলল, ব্রাজিলের কোচিং স্টাফরা তোমাকে দেখছে। এই খবর আমাকে শিহরিত করল আরও বেশি এবং আমি দুর্দান্ত একটা ম্যাচ খেললাম। ১৯৫৮ বিশ্বকাপের দলে আমার ডাক পাওয়ার শুরুটা ছিল সেখান থেকেই।
শুরুর একাদশে জায়গা পাওয়ার জন্য কানহোতেইরো ও পেপের মধ্যে লড়াই ছিল। তারাই ছিল এই পজিশনে খেলার দাবিদার। কিন্তু যে বিষয়টি আসলেই আমার পক্ষে কাজে দিয়েছিল, সেটা হচ্ছে ৪-২-৪ ফরমেশন থেকে ৪-৩-৩ ফরমেশনে দলের কৌশল বদলে যাওয়া। ফিওলো (কোচ) আমার জন্যই এই বদলটুকু এনেছিলেন। যখন আমরা বল হারাবো, আমি খেলব মিডফিল্ডারের ভুমিকায়। যখন আমাদের পায়ে বল থাকবে, তখন আমি নিখাঁদ লেফট-উইঙ্গার। পেপের বিপক্ষে এই পজিশনে খেলার লড়াইয়ে জিতে গেলাম আমি। কেননা, পেপে সবসময় খেলত ৪-২-৪ ফরমেশনে; আমি খেলতাম না-আমার ছিল দুই ভুমিকা। আমার কারণেই ব্রাজিল জাতীয় দলের প্রথমবারের মতো ব্রাজিলিয়ান স্টাইল থেকে বেরিয়ে এসে ৪-৩-৩ ছকে খেলেছিল। এবং আমরা বিশ্বকাপ জিতলাম।
ফিফা: একটা চোট তো আপনাকে ওই আসর থেকে ছিটকে দেওয়ার জোগাড় করেছিল…
জাগালো: এটা হয়েছিল মারাকানায়। সেলেসাও দলের ট্রেনিং চলছিল। টু-টাচ ফুটবল খেলা হচ্ছিল। আমি ছিলাম একদিকে, অন্য দিকে পেলে। একটা বল এসে পড়ল আঙুলের ওপর এবং আঙুলটা ছিঁড়ে গেল। হাসপাতালে গেলাম। ওই চোট পাওয়ার পর আমি এমনকি ব্রাজিল দলের ডাক্তারকে বলেছিলাম, আমাকে বিশ্বকাপে নিয়ে না যেতে, কিন্তু তিনি জানতেন, শুরুর একাদশে আমার খেলার বড় সম্ভাবনা আছে। তো তিনি আমাকে ১২টা-প্রায় ১৩টা (জাগালোর সৌভাগ্যসূচক সংখ্যা) সেলাই দিলেন এবং আমি দলের সঙ্গে রয়ে গেলাম।
তিনটা ম্যাচ মিস করলাম, কিন্তু বিশ্বকাপের আগে শেষ প্রীতি ম্যাচে খেলতে নামলাম এবং ইন্টার মিলানের বিপক্ষে গোল করলাম। আমি জানতাম না, খেলতে পারব কিনা। বিমানে স্টকহোমে যাওয়ার পথে রিকার্দো সেররান নামের ও’গ্লোবের বিখ্যাত সাংবাদিক এসে আমার পাশের সিটে বসলেন। তিনি বললেন, “তুমি শুরুর একাদশে খেলতে যাচ্ছো”। কোচের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল।
ফিফা: ১৯৫৮ সালের সুইডেন বিশ্বকাপের কোন স্মৃতিটা আপনার কাছে সবচেয়ে স্মরণীয়?
জাগালো: অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা ৩-০ গোলে জিতলাম; নিলতন সান্তোস একটা গোল করল। গণমাধ্যমে লিখেছিল যে, কোচ ওকে নির্দেশ দিচ্ছিল নিচে নেমে আসতে, কিন্তু আমি চিৎকার করে বলছিলাম, ‘নিলতন ওঠো, আমি তোমাকে কাভার করছি’। তখন আমি ৪-৩-৩ ফরমেশনে আমার দায়িত্ব সামলাচ্ছিলাম। আর ফাইনালে আমরা সুইডেনের বিপক্ষে ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়েছিলাম। এরপর ঘুরে দাঁড়ালাম। আমি চতুর্থ গোলটি করেছিলাম এবং বল তুলে দিলাম পেলের মাথায়, যাতে হেডে সে পঞ্চম গোলটি করতে পারে। সব মিলিয়ে আমি ব্রাজিলের শেষ দুই গোলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম এবং ব্রাজিল প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেল (সুইডেনকে ৫-২ গোলে হারিয়ে)।
ফিফা: ১৯৭০ সালের মেক্সিকো বিশ্বকাপ শুরুর স্রেফ ৭৫ দিন আগে আপনারে কাঁধে উঠল কোচের দায়িত্ব। যখন আপনাকে দায়িত্ব নিতে বলা হলো, তখন আমার মাথায় কী কাজ করছিল?
জাগালো: এটা ছিল আমার কাছে সবকিছু, যা আমি চেয়েছিলাম। সময়টা ছিল বিকেল চারটার দিকে। আমি তখন বোতাফোগোর দায়িত্বে ছিলাম; অনুশীলন করাচ্ছিলাম। সিবিএফ-এর অফিসিয়ালরা সেখানে আসে এবং আমাদের যে ফিজিক্যাল ট্রেনার ছিল, সে আমাকে বলল, ‘ওই গাড়িটার ওখানে যাও। তোমাকে সেলেসাওদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছে”। স্কোয়াড তখন যথারীতি ট্রেনিং ক্যাম্পে। তারা আমাকে বাড়িতে নিয়ে গেল, আমি কিছু কাপড়-চোপড় গুছিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। আমার জীবনে আমি সবচেয়ে বেশি করে এটাই (ব্রাজিলের কোচের দায়িত্ব) পেতে চেয়েছিলাম।
ঘটনাটা ছিল বেশ মজার। কারণ আগের বছর যখন জোয়াও সালদানিয়া (যার স্থালাভিষিক্ত হয়েছিলেন জাগালো) ব্রাজিলের দায়িত্ব নিলেন, আমি তখন তার রেডিও শো’য়ের হাল ধরলাম; এরপর তিনি যখন সেলেসাও দল ছাড়লেন, আমাকে তার স্থালাভিষিক্ত হতে হলো।
ফিফা: গেরসন, রিভেলিনো, তোস্তাও, জাইরজিনিয়ো ও পেলে- সবাই তাদের ক্লাবে নাম্বার-১০ হিসেবে খেলতেন। তাদের কিছুটা অদলবদল করে কিভাবে আপনি একই দলে সন্নিবেশ করিয়েছিলেন?
জাগালো: আমি দুটি বিশ্বকাপ জিতেছিলাম ৪-৩-৩ ছকে। তো যখন সেলেসাওদের দায়িত্ব নিলাম, আমি কী করতে যাচ্ছি, যে বিষয়গুলো আমার মাথায় ছিল। যে পরিবর্তনটা আনলাম, তা হচ্ছে পিয়াজ্জাকে সেন্টার-ব্যাকে সরিয়ে আনলাম, দলে নিলাম ক্লোদোয়ালদোকে এবং সবগুলো নাম্বার-১০ রিভেইলিনো, তোস্তাও, পেলে, জাইরজিনিয়ো এবং গেরসনকে ছকের মধ্যে সাজালাম। তারা বলেছিল, এত অল্প সময়ের মধ্যে তাদেরকে এই ছকে গুছিয়ে নেওয়াটা অসম্ভব, কিন্তু বিশ্বকাপ জিতেছিলাম আমরা।
ফিফা: সেবারের ইংল্যান্ড দলটির ক্ষেত্রে অনেকেই বলেন, ১৯৬৬ বিশ্বকাপ জয়ী ইংলিশ দলটিরই আরও উন্নত একটা গ্রুপ। ১৯৭০ বিশ্বকাপে তাদের মুখোমুখি হওয়াটা কি ব্রাজিলের জন্য সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা ছিল?
জাগালো: ওই ম্যাচটা আসলেই কঠিন ছিল, সবচেয়ে কঠিন। তবে আমি তোস্তাওয়ের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছিলাম এবং তার মনে হয়েছিল, উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটা আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি কঠিন ছিল।
উরুগুয়ে ১-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল এবং আমি ভাবছিলাম পাওলো সেসার কাজুকে নামাবো এবং রিভেইলিনোকে সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে নিয়ে আসব। কিন্তু ভাগ্য আমার সহায় হলো, যে খেলোয়াড়কে তুলে নিতে চেয়েছিলাম, সে ছিল ক্লোদোয়ালদো এবং ৪৫তম মিনিটে সে-ই সমতাসূচক গোলটি করল-এক্কেবারে মোক্ষম সময়ে। বিরতির সময় আমি আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম; পুরো দল নিয়েই আমি আনন্দে পাগলপারা হয়ে গিয়েছিলাম।
ছেলেদের বলেছিলাম, কিভাবে নিজেদের কাজটুকু করতে হয়, তোমরা যেটা জানো, এর বাইরে ভিন্ন কিছুর চেষ্টা করার দরকার নেই; উরুগুয়ের বিপক্ষে সেটা তারা করেওনি (সেমি-ফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়ে ৩-১ গোলে জিতেছিল ব্রাজিল)।
ফিফা: মেক্সিকো বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সেরা খেলোয়াড় কে ছিল?
জাগালো: ওওহ…এর উত্তর দেওয়া আসলেই কঠিন। জাইরজিনিয়ো ওই বিশ্বকাপে অসাধারণ খেলেছিল। কিন্তু পেলে, তোস্তাও, রিভেইলিনো, ক্লোদোয়ালদো, গেরসনের কথাও উল্লেখ করতে হবে। আমার জীবনে দেখা সেরা মিডফিল্ডার, নাম্বার-১০ ছিল গেরসন।
ফিফা: আপনি ১৯৫৮ বিশ্বকাপের দলে খেলেছেন এবং ১৯৭০ সালের দলের কোচ ছিলেন। কোনটা ভালো দল?
জাগালো: আমি তাদের মধ্যে তুলনা করতে চাই না। দুটি দলই ছিল অবিশ্বাস্য। তারপরও বলতে হবে, ’৫৮-এর দলটা আসলেই ভালো ছিল। কেননা, ওই দলটায় আমাদের রক্ষণভাগ ছিল সেনসেশনাল, গ্রেট একজন মিডফিল্ডার এবং আক্রমণভাগে ছিল গারিঞ্চা, পেলে ও ভাভা। ওহ, আমাদের ওই দলটায় মারিও জাগালো ছিল লেফট-উইংয়ে! (হাসি)
ফিফা: নিজের চার বিশ্বকাপ শিরোপার মধ্যে কোনটা আপনার কাছে সেরা?
জাগালো: এর উত্তরটা দেওয়া খুবই সহজ। খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৫৮ বিশ্বকাপ এবং কোচ হিসেবে ১৯৭০ বিশ্বকাপ। সাতটি বিশ্বকাপে এবং চারটি ফাইনালসে অংশ নিয়েছিলাম। শেষ ফাইনাল ছিল ১৯৯৮ বিশ্বকাপে, যখন বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় রোনালদোর একটা সমস্যা হয়েছিল…সেটাও দুর্দান্ত দল ছিল-আমাদের হেরে যাওয়া উচিত হয়নি। (ফ্রান্সের বিপক্ষে সেই ম্যাচে অসুস্থতার কারণে সেরাটা দিতে পারেননি রোনালদো, ব্রাজিলও হেরে গিয়েছিল ৩-০ গোলে)।