Published : 25 Sep 2024, 11:13 PM
গেল সপ্তাহেই ম্যাচ বাড়ানোর প্রতিবাদ করেছিলেন রদ্রি, সপ্তাহ ঘুরতে তিনি নিজেই পড়লেন বড় চোটে। পুরো মৌসুমের জন্য ছিটকে যেতে পারেন ম্যানচেস্টার সিটির মিডফিল্ডার। তার চোটে ফের আলোচনায় ফুটবল মৌসুমে ব্যস্ত সূচির প্রসঙ্গ।
আর্সেনালের বিপক্ষে গত রোববারের ম্যাচে পায়ের গুরুতর চোটে পড়েছেন রদ্রি। এর আগের সপ্তাহেই তিনি বলেছিলেন, ম্যাচ বাড়ানোর প্রতিবাদে ধর্মঘটে যেতে পারে ফুটবলাররা।
রদ্রি ছাড়াও সাবেক ফুটবলার ও কোচদের মধ্যে থিয়েরি অঁরি, জেমি ক্যারাঘার, পেপ গুয়ার্দিওলা, এরিক টেন হাগরা ম্যাচ কমিয়ে আনার জোর দাবি তুলেছেন।
সাবেক আর্সেনালে ফরোয়ার্ড অঁরির মতে, ফুটবলাররা এখন খেলার আনন্দ হারিয়ে ফেলেছেন। লিভারপুলের সাবেক ডিফেন্ডার ক্যারাঘার বলেছেন, তাদেরকে (ফুটবলাররা) গবাদি পশুর মতো ব্যবহার করা হচ্ছে।
রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নরওয়েজিয়ান স্কুল অব স্পোর্টস সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক মার্ক ও'সুলিভান বলেছেন, এমন অবস্থার কারণে খেলোয়াড়দের দুর্দান্ত কিছু করার সামর্থ্য কমে যাচ্ছে।
"খেলাটিকে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে এবং শুধুমাত্র ভোক্তাদের উদ্দেশ্যে ফিফা ও উয়েফার দ্বারা এটা করা হয়েছে। ফুটবলারদের শেষ বিন্দুটুকু নিংড়ে বের করে ফেলা হচ্ছে। তারা (ফিফা ও উয়েফা) ফুটবলারদের কল্যাণের ব্যাপারে কিছুই ভাবছে না।"
লিগামেন্টের চোটে পড়ার আগে রদ্রি বলেছিলেন, মৌসুমে ৪০ থেকে ৫০টি ম্যাচ হলে ফুটবলাররা নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে খেলতে পারে।
কিন্তু উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের নতুন কাঠামোর কারণে এবারের মৌসুমে কোনো কোনো ফুটবলারকে ৮০টি ম্যাচও খেলতে হতে পারে। আন্তর্জাতিক বিরতিতে জাতীয় দলের খেলাও আছে।
যুক্তরাষ্ট্রে আগামী বছরের ১৫ জুন থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত হবে নতুন কাঠামোতে ৩২ দলের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। সম্প্রতি সিবিএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্যারাঘার বলেছেন, এই টুর্নামেন্ট কেউ খেলতে চায় না, কেউই এই টুর্নামেন্ট নিয়ে উচ্ছ্বসিত নয়।
ফুটবলারদের বৈশ্বিক ইউনিয়ন ফিফপ্রোও গত বছর জুড বেলিংহ্যাম, কিলিয়ান এমবাপের মতো তরুণ ফুটবলারদের ওয়ার্কলোড নিয়ে তুলনামূলক একটি প্রতিবেদনে শঙ্কা প্রকাশ করেছিল।
১৮ বছর বয়সেই অঁরির তুলনায় দ্বিগুণ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলে ফেলেছিলেন এমবাপে। ওয়েইন রুনি, ডেভিড ব্যাকহ্যামদের ১৯ বছরের তুলনায় বেলিংহ্যামও অনেক বেশি চাপ নিয়ে ফেলেছেন।
চলতি মৌসুমে রেয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়া এমবাপেও এরই মধ্যে পেশির চোটে পড়েছেন। আর চোটে কারণেই এক মাস বাইরে থাকার পর কিছু দিন আগে মাঠে ফিরেছেন তার ক্লাব সতীর্থ বেলিংহ্যাম।
ব্যস্ত সূচিতে ফুটবলারদের চোটের মিছিলে লামিনে ইয়ামালদের মতো প্রতিভাধর ফুটবলারদের স্বাস্থ্যের দিকটি নজরে রাখার তাগিদ দিয়েছেন ও'সুলিভান।
"সে (ইয়ামাল) বাচ্চা একটা ছেলে এবং ৬০টি (আসলে ৫০) ম্যাচ খেলেছে। তার শরীর এখনও বাড়ছে। বাড়ন্ত শরীরের জন্য শক্তির প্রয়োজন হয়। খেলার জন্য শক্তির প্রয়োজন পড়ে। অল্প সময়ে তাকে অনেক বেশি পরিশ্রম করানো হচ্ছে।"
ইয়ামালের ক্লাব সতীর্থ, সময়ের সেরা প্রতিভাধর ফুটবলারদের মধ্যে পেদ্রি, আনসু ফাতি, গাভিরা চোটের কারণে দীর্ঘ দিন মাঠের বাইরে ছিলেন। পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে তাই উদ্ভাবনী কিছুর প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা দেখছেন ও'সুলিভান।