Published : 08 Aug 2021, 07:50 PM
রোববার শেষ দিনে তিনটি সোনা জিতে চীনকে টপকে যায় যুক্তরাষ্ট্র। ৩৯ সোনা, ৪১ রুপা ও ৩৩টি ব্রোঞ্জসহ মোট ১১৩টি পদক নিয়ে আসর শেষ করেছে দেশটি।
চীন সোনা জিতেছে ৩৮টি। সঙ্গে ৩২টি রুপা ও ১৮টি ব্রোঞ্জসহ তাদের প্রাপ্তি মোট ৮৮টি পদক।
২০১৬ সালে রিও দে জেনেইরোতে নিষ্পত্তি হয়েছিল ৩০৭টি পদকের। এবারের আসরে সোনার নিষ্পত্তি হওয়ার কথা ছিল ৩৩৯টি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়েছে ৩৪০টি। হাই জাম্পে জম্পেস লড়াইয়ের পর কাতারের মুতাজ ইসা বারশিম ও ইতালির জিয়ানমার্কো তামবেরি পদক ভাগাভাগি করায় পদকসংখ্যা বাড়ে একটি। অলিম্পিকসের ১১৩ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঘটে পদক ভাগাভাগির ঘটনা।
গতবার ৪৬টি সোনা ৩৭টি রুপা ও ৩৮টি ব্রোঞ্জসহ মোট ১২১টি পদকে জিতে তালিকায় শীর্ষে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। ২৭টি সোনা, ২৩টি রুপা ও ১৭টি ব্রোঞ্জসহ ৬৭টি পদক নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল গ্রেট ব্রিটেন। চীন তৃতীয় স্থানে ছিল ২৬টি সোনা, ১৮টি রুপা ও ২৬টি ব্রোঞ্জ মিলিয়ে ৭০টি পদক নিয়ে।
গতবারের চেয়ে এবার সাতটি সোনা কম পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে দেশটির অলিম্পিক কমিটির প্রধান সুসানে লায়নস খুশি দলের পারফরম্যান্সে।
সিমোন বাইলস
গত বছরই হওয়ার কথা ছিল টোকিও অলিম্পিকস, কিন্তু প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের থাবায় এক বছর পিছিয়ে গত ২৩ জুলাই শুরু হয় আসরটি।
ব্যক্তিগতভাবে কারো কারো জন্য আসরটি কেটেছে ভীষণ হতাশায়। তাদের একজন সিমোন বাইলস। জিমন্যাস্টিকসে রেকর্ড ছয়টি সোনা জয়ের লক্ষ্যে টোকিওতে পা রেখেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের এই তারকা। টিম ইভেন্টে বাজে পারফরম্যান্স করে বাদ পড়ার পর মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভেবে একে একে ব্যক্তিগত চারটি ইভেন্টের ফাইনাল থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
পাঁচ বছর আগে রিও অলিম্পিকসে চারটি সোনা ও একটি ব্রোঞ্জ জয়ী বাইলস পরে নিজের শেষ ইভেন্ট ব্যালান্স বিমে ফিরলেও পারেননি নিজেকে মেলে ধরতে। ব্রোঞ্জ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। আর শুরুতে দলগত ইভেন্টের অংশ থাকায় পেয়েছিলেন দলের জেতা রুপার পদক।
আবার যেমন চমক হয়েছে ইতালিয়ান অ্যাথলেট মার্সেল জেকবস। অলিম্পিকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্টের একটি ১০০ মিটার দৌড়ে অবাক করে দিয়ে সোনার পদক জিতে নেন এই ইতালিয়ান। আর মেয়েদের ১০০ মিটারে ৩৩ বছরের পুরনো রেকর্ড টাইমিং ভেঙে সেরা হন জ্যামাইকার এলেইন টম্পসন। গতবারও এই ইভেন্টে সেরা হয়েছিলেন তিনি।
আর তিন আসরে ১০০ মিটারে সেরা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে টোকিওতে পা রাখা তারই স্বদেশি শেলি-অ্যান ফ্রেজার-প্রাইস।
কেলেব ড্রেসেল
এরপর ৪০০ মিটার রিলেতে সোনা জিতে অলিম্পিকসের আঙিনায় পদকের সংখ্যায় স্বদেশি কিংবদন্তি কার্ল লুইসকে ছাপিয়ে উঠেন চূড়ায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ছেলেদের জন্য এবারের আসরটি ভালো কাটেনি। অ্যাথলেটিকসের একক ইভেন্টে এবার তাদের সোনা কেবল একটি, শট পুটে। আর শেষে এসে ৪০০ মিটার রিলে জয়ের মাধ্যমে কাটে ট্র্যাকে সোনার খরা।
গেমসের সাঁতারে এবারও এগিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাঁতারুরা। তবে গতবার তাদের করা আধিপত্যে এবার রাশ টেনে ধরে অস্ট্রেলিয়া। রেকর্ড ২৩টি সোনার পদক জয়ী ফেলপসকে ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র এবারও সাঁতারে সর্বাধিক ইভেন্ট জিতেছে বটে, তবে সংখ্যাটা কমেছে অনেকখানি। ৩৫টি ইভেন্টে সর্বোচ্চ ১১টি সোনা, ১০টি রুপাসহ মোট ৩০টি পদক জিতেছে তারা। গতবার দেশটি জিতেছিল ১৬টি সোনা ও আটটি রুপাসহ মোট ৩৩টি পদক।
গতবার তিনটি সোনা জেতা অস্ট্রেলিয়া এবার জিতেছে নয়টি।
টি লেডেকি
জমজমাট লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার আরিয়ার্ন টিটমাসের কাছে ২০০ মিটার ও ৪০০ মিটারে মুকুট হারিয়েছেন কেটি লেডেকি; তবে ৮০০ মিটার ও ১৫০০ মিটারে নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরেই রেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নারী সাতারু।
বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অলিম্পিকসের অংশ হওয়াই ছিল স্বার্থকতা। টোকিওতে অংশ নেওয়া ছয় অ্যাথলেট রোমান সানা, দিয়া সিদ্দিকী, আব্দুল্লাহ হেল বাকি, আরিফুল ইসলাম, জুনাইনা আহমেদ ও জহির রায়হানের মধ্যে রোমান কেবল উঠেছিলেন আর্চারির দ্বিতীয় রাউন্ডে। ব্যক্তিগত সেরা টাইমিং করেন দুই সাঁতারু আরিফুল ও জুনাইনা।