Published : 15 Apr 2023, 07:13 PM
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের উপর ফিফার নিষেধাজ্ঞার ইস্যুতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। বিস্মিত হয়েছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, “ইয়েস অ্যান্ড নো”।
ফিফার তদন্তে সংস্থাটির দেওয়া ফান্ডের অপব্যবহার এবং আর্থিক কেলেংকারির বিষয় ধরা পড়ায় শুক্রবার সোহাগকে ফুটবলের সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা ও ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ জরিমানা করা হয়।
এই ইস্যুতে বাফুফে সভাপতি শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে নিজের মতো করে কিছু কথা বলে, একটা-দুটো প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি। জানান, দ্রুত জরুরি সভা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও।
“আজকে আমরা সবাই একসাথে হয়েছি, একটা দুঃসংবাদ…বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নিষিদ্ধ হয়েছেন দুই বছরের জন্য। আপনারা যেমন কালকে ডকুমেন্টস পেয়েছেন, আমিও কালকেই পেয়েছি এবং কিছু কিছু ডকুমেন্ট কালকে পড়েছি, আজকেও পড়েছি, কিন্তু সবগুলো এখনও পড়তে পারি নাই। কিন্তু ফিফা যখন নিষিদ্ধ করেছে…তার প্রেক্ষিতে আমাদের যে কর্তব্য উনাকে ব্যান করা (নিষিদ্ধ করা) এটা আপনারা দেখেছেন হয়ে গেছে।”
“পরের ধাপ হচ্ছে, আমি এটা জরুরি মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার দুজন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং একজন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট দেশের বাইরে আছেন। উনারা কালকে বোধহয় পৌঁছাবেন। তো পরশু আমরা তাদের নিয়ে জরুরি মিটিং করে আপনাদের জানিয়ে দিব আমাদের পরবর্তী করণীয়। ফিফা এখন তাকে নিষিদ্ধ রাখতে বলেছে, আমরাও নিষিদ্ধ রেখেছি, তো আমরা ওখানেই আছি। বাদ বাকি এখন বাফুফে কী অ্যাকশনে যাবে, সেটার জন্য আপনাদের দুদিন অপেক্ষা করতে হবে।”
“সোমবার ফিফার অফিস খুলবে, আমি তো কাগজ পেয়েছি, ফিফা খুললে ওদের জেনারেল সেক্রেটারির সঙ্গে আলোচনা করে, তারপরের দিন আমরা নিজেরা মিটিং করে আপনাদের জানিয়ে দিব আমাদের নেক্সট স্টেপ কি হবে।”
গত ফেব্রুয়ারিতে আর্থিক লেনদেন এবং খরচের বিল-ভাউচারের বিষয়ে কথা বলতে ফিফার সদর দপ্তর জুরিখে গিয়েছিলেন সোহাগসহ বাফুফের আরও তিন কর্মকর্তা। সালাউদ্দিন জানালেন, তখনই কিছু একটা হতে যাচ্ছে, এমন কিছু উপলব্ধি করেছিলেন তিনি। তবে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তে বিস্মিত কিনা, এমন প্রশ্নের জবাব দিলেন মিশ্রভাবে।
“ওরা যখন জুরিখে গেছে, তখনই তো জানি যে একটা ইয়ে চলছে, কিন্তু আমাদেরকে অফিসিয়ালি কেউ জানায়নি এবং এখন পর্যন্ত আমি ফিফার থেকে চিঠি পাইনি। আমি ওয়েবসাইটে দেখেছি এবং ধরে নিচ্ছি এটা অফিসিয়াল।”
“(সারপ্রাইজড হয়েছেন কিনা) ইয়েস অ্যান্ড নো। এবং সেটা কেন তা আপনাদের বলছি, যখন এথিকস কমিটি এটার পেছনে লেগেছে, দে উইল হ্যাভ টু গিভ সামথিং…বিষয়টা তো এমন হতে পারে না। এরপর এটা নিয়ে রাতে সোহাগের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সে মনে করে তার উপর অবিচার করা হয়েছে এবং সে আমাকে বলল যে, এটা নিয়ে কোর্ট অব আর্বিট্রেশনে যাবে।”
সোহাগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাখ্যায় ৫১ পাতার প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে ফিফা। সেখানে উঠে এসেছে বিস্তারিত। ওই প্রতিবেদনের পুরোটা পড়েননি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান সালাউদ্দিন।
“ওরা মূলত যেটা ফোকাস করেছে…কোড অব এথিকস অ্যান্ড রেসপন্সিবিলিটি। যাই বলা হোক, সবকিছুই এর মধ্যে আসবে। এখানে লুকানোর কিছু নেই। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগে আমি যদি কিছু বলি, তাহলে আমার বোর্ড মিটিংয়ের প্রয়োজন। আমার সব সহ-সভাপতি এবং সিনিয়র মেম্বারদের সাথে বসে সিদ্ধান্ত যেটা হবে, সেটাই বলতে হবে।”
বাফুফের সাধারণ সম্পাদকের আর্থিক কেলেংকারিতে নিষিদ্ধ হওয়া বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য লজ্জাজনক কিনা, এমন প্রশ্নের জবাব দেননি সালাউদ্দিন। ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলে সংবাদ সম্মেলন কক্ষ ছাড়েন বাফুফে সভাপতি।