Published : 30 Sep 2024, 06:18 PM
পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের মধ্যে সংস্কার নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বৈঠকের প্রথম দিন দরপতন দেখল বিনিয়োগকারীরা।
বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারে দরপতনের পরও আগের দিন সূচক বেড়েছিল কয়েকটি ব্যাংকের শেয়ারদরে উত্থানের কারণে। সেসব কোম্পানির দর সংশোধনে সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার সূচক পড়ল ৩৩ পয়েন্ট।
রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইর প্রধান সূচক ১৮ পয়েন্ট বাড়ার পরেও বাজার মূলধন কমেছিল ২১ কোটি টাকার বেশি। সূচক পতনের প্রতিক্রিয়ায় এদিন বাজার মূলধন কমল ২ হাজার ১৮৮ কোটি টাকার বেশি।
১৫৭টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৯৬টির দর, আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে ৪২টি কোম্পানির শেয়ার।
লেনদেন অবশ্য কিছুটা বেড়ে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আগের দিন ৪৮১টি কোটি টাকার শেয়ার কেনা-বেচা হয়েছিল, যা অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন লেনদেন।
সরকার পতনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসি এদের পুঁজিবাজার সংস্কার বিষয়ে রোডম্যাপ প্রণয়নে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।
আগারগাঁওয়ে সংস্থার কার্যালয়ে এই আলোচনায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসই, চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ-সিএসই, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড-সিডিবিএল, সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড-সিসিবিএল, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট-বিআইসিএম, বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটস-বিএএসএম ও ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড-সিএমএসএফ এর শীর্ষ নির্বাহীরা অংশ নেয়।
ডিএসইর প্রধান সূচকের সঙ্গে শরিয়াভিত্তিক কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়া সূচক ৭ পয়েন্ট ও ‘ব্লু’ চিপ খ্যাত ডিএস৩০ সূচক কমেছে ৯ পয়েন্ট।
আগ্রহের শীর্ষে থাকা ব্যাংক খাতেও দরপতন
খাতওয়ারি লেনদেনে টাকার অঙ্কে আবার সবাইকে ছাড়িয়ে ব্যাংক খাত, তবে ৩৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩৩টিই দর হারিয়েছে। আগের দরে লেনদেন শেষ হয়েছে বাকি তিনটির। একটির দর বাড়েনি। হারানো শীর্ষ দশের ছিল ব্যাংক খাতের দুটি কোম্পানি।
একদিনে ৯১ শতাংশ ব্যাংকের শেয়ারের দর পতন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এর আগে দেখা যায়নি।
আগের দিন লেনদেনের ৩৪ শতাংশ ছিল এই খাতের অবদান। সেটিও কিছুটা কমে হয়েছে সাড়ে ২৭ শতাংশ। ১২১ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার কেনা-বেচা হয়েছে এই খাতে।
দ্বিতীয় অবস্থানে ১৪ দশমিক ২৮ শতাংশ অবদান রাখে ওষুধ ও রসায়ন খাতের প্রতিষ্ঠান। ১৫টির দর বেড়ে এবং ১৭টির হারিয়ে লেনদেন শেষ করেছে। দুটি ছিল আগের দিনের দরে।
একক খাত হিসেবে ব্যাংকের পরে সবচেয়ে বেশি দরপতন হয় প্রকৌশল ও বিমা খাতের শেয়ারে। অন্যান্য খাতগুলোতে মিশ্র ধারায় লেনদেন চলে।
অন্যদিকে তৈরি পোশাক খাতের শ্রম পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নতির প্রভাবে বস্ত্রখাতের শেয়ারে বেশিরভাগের দর বেড়েছে আগের দিনের চেয়ে।
দর বৃদ্ধির ও পতনের শীর্ষে যেসব কোম্পানি
দর বৃদ্ধিতে শীর্ষে উঠে আসা শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি-এসপিসিএল, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইনান্স কোম্পানি বিআইএফএল ও সালভো কেমিক্যালসের দর বেড়েছে সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে। কাছাকাছি বেড়েছে আনলিমা ইয়ার্নের দর।
নিউলাইন টেক্সটাইলস, লিবরা ইনফিউশন, রিজেন্ট টেক্সটাইলস ও ন্যাশনাল টিউবসের দর বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি। শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ও খান ব্রাদার্স পিপি ওভেনের দর বেড়েছে ৬ শতাংশের বেশি।
অন্যদিকে শেয়ার দর হারানোর শীর্ষ দশটিতে নাম লিখিয়েছে ডেসকো, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক।
দরপতনের শীর্ষে ছিল ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, যেটির ইউনিট আগের দিনের চেয়ে ৮.৩৩ শতাংশ কমে লেনদেন হয়েছে।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ডেসকো সাড়ে ৭ শতাংশের বেশি, এসআইবিএল, আইসিবি অগ্রণী ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইন্দোবাংলা ফার্মা, লিনডে বিডি ও ইসলামিক ফাইন্যান্স ৬ শতাংশের বেশি এবং অলিম্পিক অ্যাকসেসোরিজ লিমিটেড ও মিথুন নিটিংয়ের দর কমেছে ৫ শতাংশের বেশি।
আরও পড়ুন: