Published : 08 Jul 2017, 03:06 PM
সম্প্রতি পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী আদালত ফেইসবুকে ধর্মবিদ্বেষী মন্তব্যের জন্য ৩০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এই ঘটনার পরই এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হল।
ফেইসবুকের জননীতিমালাবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট জোল কাপলান পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিসার আলী খান-এর সঙ্গে দেখা করেছেন। মন্ত্রী পাকিস্তানে ফেইসবুকের একটি কার্যালয় অনুমোদনের প্রস্তাব দিয়েছেন। বর্তমানে দেশটিতে ৩.৩০ কোটি মানুষ ফেইসবুক ব্যবহার করছে। খান বলেন, পাকিস্তান মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, কিন্তু এর মধ্যে ইসলামের অপমান বা ধর্মীয় উত্তেজনা ছড়াতে ইন্ধন যোগানোর সুযোগ নেই। তিনি বলেন, “আমরা কাউকে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে দিতে পারি না।” ফেইসবুক এই বৈঠককে ‘গঠনমূলক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি এক ইমেইলে বলে, “ফেইসবুক তাদের সেবা ব্যবহারকারীদের অধিকার রক্ষায় প্রতিষ্ঠানের জোরালো অঙ্গীকার প্রকাশ করতে এবং মানুষকে মুক্তভাবে ও নিরাপদে তাদের মত প্রকাশের সুযোগ দিতে পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে।”
ফেইসবুক আরও বলে, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক বৈঠক ছিল, এতে আমরা আদালতের সাম্প্রতিক মামলাগুলো নিয়ে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছি আর এটি স্পষ্ট করেছি যে আমরা কোনো কনটেন্ট নিষেধাজ্ঞা বা ডেটার জন্য সরকারের অনুরোধের ক্ষেত্রে কড়া আইনি নীতিমালা অনুসরণ করি।”
ধর্মবিদ্বেষ ও সন্ত্রাসের প্রচারণা চালানো অ্যাকাউন্টগুলো সরিয়ে দিতে সামাজিক মাধ্যমে অভিযান চালাচ্ছে পাকিস্তান। কিন্তু মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এর মাধ্যমে সরকার বা সামরিক বাহিনীর সমালোচনাকারী লেখক আর ব্লগারদেরও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
চলতি বছর দেশটির পাঁচজন লেখক ও প্রভাবশালী অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট তিন সপ্তাহের জন্য নিখোঁজ হয়ে যান। তাদের মধ্যে একজন মার্চ মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক এক অনুষ্ঠানে বলেন, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা তাকে অপরহরণ করেছিল ও তাকে নির্যাতন করা হয়েছে, খবর রয়টার্স-এর।
বাকিদের পরিবারের দাবি, ডানপন্থী ও ইসলামি দলগুলো সমালোচনামূলক লেখার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ধর্মবিদ্বেষের অভিযোগ দাখিল করেছে।
রয়টার্স-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, নবী বা ইসলামের অপমান করা হয়েছে বলে বিবেচিত হয় এমন যে কোনো কিছু করলে পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। আর মাঝেমধ্যে শুধু একটি অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই সহিংস আন্দোলন সৃষ্টি হচ্ছে, কখনও আবার কোনো বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াই জনতার রায়ে দোষীসাব্যস্ত ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, এ নিয়ে থাকা আইন প্রায়ই ব্যক্তিগত লাভের উদ্দেশ্যে অপব্যবহৃত হচ্ছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে ফেইসবুকের ধর্মবিদ্বেষী কনটেন্ট দেওয়ার অভিযোগে মাশাল খান নামের এক পাকিস্তানী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে পুলিশ ৫৭ জনকে আটক করে ও জানায় খান ধর্মবিদ্বেষী কিছু করেছেন এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।