Published : 28 May 2025, 06:09 PM
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কানাডা চাইলে বিনামূল্যেই যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার পেতে পারে, কেবল ৫১তম রাজ্য হতে রাজি হতে হবে।
আর তা না হলে ‘গোল্ডেন ডোমের’ জন্য তাদের গুনতে হবে ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলার।
“আমি কানাডাকে বলেছি, যারা আমাদের অনন্যসাধারণ গোল্ডেন ডোম ব্যবস্থার অংশ হতে খুবই আগ্রহী, তারা যদি পৃথক, আমাদের সমান সমান নয় এমন দেশ হিসেবে থাকে তাহলে তাদের ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলার খরচ পড়বে।
“কিন্তু তারা এটা বিনা পয়সায় পেতে পারে যদি তারা আমাদের আদরের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যায়। তারা এ প্রস্তাব বিবেচনা করছে,” মঙ্গলবার ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প এমনটাই লিখেছেন বলে জানিয়েছে ইকোনমিক টাইমস।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ প্রস্তাবের পর কানাডার সরকারের দিক থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
যদিও কয়েকদিন আগে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছিলেন, গোল্ডেন ডোম কর্মসূচি নিয়ে অটোয়া ও ওয়াশিংটনের মধ্যে আলোচনা চলছে।
“কানাডার জন্য এটা কি ভালো সিদ্ধান্ত? হ্যাঁ, কানাডাবাসীর সুরক্ষার জন্য এমন নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকা ভালো,” সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন তিনি।
চলতি মাসের শুরুর দিকে হোয়াইট হাউজে গিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হওয়ার প্রস্তাবও খারিজ করে দিয়েছিলেন।
“কানাডা কখনোই বিক্রির জন্য নয়,” বলেছিলেন কার্নি।
ইকোনমিক টাইমস লিখেছে, উত্তর আমেরিকার এই দুই প্রতিবেশী দেশের সরকারের মধ্যে কথার লড়াই চললেও ওয়াশিংটন-অটোয়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আগের মতোই আছে। দুই দেশই নর্থ আমেরিকান অ্যারোস্পেস ডিফেন্স কমান্ডের (নোরাড) দুই অংশীদার। যদিও যৌথ এই আকাশ নিরাপত্তা কর্মসূচিটি কয়েক দশকের পুরনো।
জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর থেকে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্কে আগের গলাগলি দেখা যাচ্ছে না। ট্রাম্প যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেছেন, তার কোপে পড়ে পণ্য রপ্তানিতে অটোয়ার শুল্ক বেড়ে গেছে। দুই দেশের মধ্যে মাঝেমধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েনও দেখা যাচ্ছে।
ট্রাম্প রাখঢাক ছাড়াই বেশ কয়েকবার বলেছেন, কানাডার উচিত যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হয়ে যাওয়া।
দিনকয়েক আগে তিনি জানিয়েছিলেন, গোল্ডেন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যুহের খরচ পড়বে ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার।
ব্যালিস্টিক থেকে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, এমনকী হাইপারসনিক অস্ত্রের মতো আধুনিক হুমকি মোকাবেলার লক্ষ্যে বানানো এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ২০২৯ সালে, তার মেয়াদের একেবারে শেষ প্রান্তে মোতায়েন হবে বলেও আশা দিয়েছেন তিনি।
“এই ব্যবস্থা আমাদের রক্ষা করবে, ক্ষেপণাস্ত্র যদি মহাকাশ থেকে ছোড়া হয়, তাও,” ওভাল অফিস থেকে এমনটাই বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এই ব্যবস্থার বিশেষত্ব হচ্ছে, এটি নকশা করা হয়েছে এমনভাবে যেন ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার আগ মুহূর্ত থেকে শুরু করে আঘাত হানার আগে যে কোনো পর্বে এটি হামলা প্রতিহত করতে পারে। তবে এটা কার্যকর করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রথমবারের মতো মার্কিন যুদ্ধাস্ত্র মহাকাশে নিয়ে যেতে হবে।
সঙ্গে প্রযুক্তিগত সংশয়ও রয়েছে। মহাকাশভিত্তিক অপ্রমাণিত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত ব্যবস্থায় গুরুতর চ্যালেঞ্জ আছে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যুহটি বানাতে ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের অনেক বেশি লাগবে এবং ২০২৯ এও এটি মোতায়েন করা যাবে না বলেই অনুমান তাদের।