Published : 03 Jan 2024, 02:16 PM
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপ-প্রধান সালেহ আল-আরৌরিকে হত্যার ঘটনায় গাজার যুদ্ধ ফিলিস্তিনি ছিটমহলটির বাইরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাব্য ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছ, জানিয়েছেন লেবানন ও ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার রাতে বৈরুতের দাহিয়েহতে হামাসের কার্যালয়ে বিস্ফোরণের ওই ঘটনা ঘটে। ড্রোনের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় ইসরায়েল। আরৌরিসহ চারজন নিহত হন।
৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলা চালায়। এর প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকেই হামাস শাসিত গাজায় ভয়াবহ বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং পরে স্থল হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তিন মাস ধরে তারা গাজায় হামলা চালিয়ে গেলেও গুপ্তহত্যার শিকার হওয়া হামাসের প্রথম জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা আরৌরি (৫৭) ।
হামাসের মিত্র লেবাননের ভারী অস্ত্রে সজ্জিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিন ইসরায়েলের সঙ্গে গোলাগুলি বিনিময় করে চলছে।
হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসারাল্লাহ লেবাননের মাটিতে কোনো গুপ্তহত্যা চালানোর বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, “তেমন কিছু হলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে।”
মঙ্গলবার হিজবুল্লাহ জানায়, তারা আরৌরির হত্যাকাণ্ডের পর ইসরায়েলের মার্জ শহরের কাছে একদল ইসরায়েলিকে সেনাকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েল তাদের নাগরিকদের ওপর প্রাণঘাতী আক্রমণ চালানোর জন্য অনেকদিন ধরেই আরৌরিকে দায়ী করে আসছে। কিন্তু হামাসের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, গাজা যুদ্ধের ফলাফল ও হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে কাতার ও মিশর মধ্যস্থতার যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে আরৌরি সেই আলোচনার ‘একেবারে কেন্দ্রে ছিলেন’।
ইসরায়েল আরৌরিকে হত্যার কথা স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটাই করেনি। কিন্তু দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগারি বলেছেন, যে কোনো পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলি বাহিনী প্রস্তুতির উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।
ইসরায়েলের অভিযোগ, আরৌরি হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জ-এল-দীন আল-কাসাম ব্রিগেডের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং তিনি অনেক বছর ধরেই ইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে হামাসের আক্রমণের নির্দেশদাতা ও তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
২০২৩ এর অগাস্টে আরৌরি বলেছিলেন, “আমি শহীদ হওয়ার অপেক্ষায় আছি। আমরা মনে হয়, আমি অনেক বেশি সময় ধরে বেঁচে আছি।”
এর মাধ্যমে গাজায় অথবা বিদেশে হামাস নেতাদের শেষ করার ইসরায়েলি হুমকির প্রতি তিনি ইঙ্গিত করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কেনান বলেছেন, “আরৌরিক হত্যাকাণ্ড নিঃসন্দেহে জায়নবাদী দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আরেকটি ঢেউ তৈরি করবে ও লড়াইয়ের প্রেরণা যোগাবে।”
আরৌরির হত্যাকাণ্ডের পর পশ্চিম তীরের রামাল্লা ও অন্য শহরগুলোতে শত শত ফিলিস্তিনি রাস্তায় নেমে এসে এর প্রতিবাদ করে ও ‘প্রতিশোধ, প্রতিশোধ, কাসাম!’ বলে শ্লোগান দেয়।
আরও পড়ুন:
বৈরুতে বিস্ফোরণে হামাস নেতা সালেহ আল-আরৌরি নিহত