Published : 10 May 2025, 03:15 PM
সম্পদের ‘অপ্রতুলতার’ কারণে শিক্ষকদের উপযুক্ত সম্মানী দেওয়া যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার।
তিনি বলেছেন, “রাষ্ট্র হিসাবে আমরা হয়তো শিক্ষকদেরকে যে পরিমাণ সম্মানী, তাদের বেতন, অন্যান্য সুযোগ সুবিধা আমরা দিতে পারছি না; কারণ সম্পদের অপ্রতুলতা রয়েছে।
“কিন্তু অবশ্যই আমাদের উপর দায়িত্ব বর্তায়- মহান পেশায় নিয়জিত যে শিক্ষক সমাজ যারা রয়েছেন, একেবারে অজপাড়াগাঁয়ের প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য পর্যন্ত, তাদের সকলেই সম্মানের দাবিদার।”
শনিবার দুপুরে মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধন এবং প্রাথমিক শিক্ষা পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন অধ্যাপক সি আর আবরার।
শিক্ষকতাকে মহান পেশা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “এটা খালি গালভরা বুলি নয়। এটা আসলেও তাই। শিক্ষকরা চাকরি করতে আসেন না, তারা একটা স্বপ্ন দেখেন ভবিষ্যতের ছেলেমেয়েদের কারিগরি হিসাবে গড়ে তোলার, সে দায়িত্ব তারা নিয়েছেন।
“আমাদের উচিত তাদের সাথে আমাদের আচার-আচরণ, নিয়মনীতির ক্ষেত্রে যে ধরনের তাদের প্রাপ্য, সেটাই যেন আমরা করি। তাদের চাকরিপ্রাপ্তি থেকে শুরু করে তাদের ট্রান্সফার, রিটায়ার করার পরে তাদের যে বিভিন্ন দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে হয়, তাদের যে ন্যায্য প্রাপ্তি, এত বছরের তাদের সঞ্চিত অর্থ- সেগুলোর জন্য, সেগুলোর ক্ষেত্রে সেগুলো যেন নিজেদের স্ট্রিম লাইন করতে পারি, সেই ব্যবস্থাটা আমাদের করতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০ বছর শিক্ষকতা করে আসা অধ্যাপক রফিকুল বলেন, “যদি মুখে শুধু বলি, শিক্ষকদের দায়িত্ব পালন করা উচিত, কিন্তু এর সাথে তাদের মর্যাদার বিষয়টা যদি আমরা আত্মস্থ না করি এবং সেইভাবে দায়িত্ব পালন না করি, তাহলে কিন্তু হবে না।”
তিনি বলেন, “শিক্ষা একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ, এখানে একেবারে ছোটকাল থেকে শুরু করে টারশিয়ারি ইনস্টিটিউশন পর্যন্ত দেখভালের দায়িত্ব কিন্তু রাষ্ট্র গ্রহণ করেছে। এখানে পরিবারগুলো বহুলাংশেই কিন্তু দায়িত্বটা অর্পণ করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে। কিন্তু আমরা জানি বহুলাংশেই সেগুলোর ক্ষেত্রে নানা রকমের ব্যত্যয় ঘটছে।
“তার জন্য যারা এসকল প্রতিষ্ঠান ম্যানেজ করেন, সেই এলাকার সামাজিক যে অবস্থান, রাজনৈতিক যে প্রেক্ষাপট, এ সমস্ত কিছুই কিন্তু….এটাকে কলুষিত বলব না, এটাকে ইনফ্লুয়েন্স করে। যদি ভালোর জন্য ইনফ্লুয়েন্স করে তাহলে ভালো ঘটবে, যদি খারাপের জন্য ইনফ্লুয়েন্স করে- তাহলে খারাপ ঘটে।”
অনুষ্ঠানে ১৪টি ক্যাটাগরি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পদক দেওয়া হয়। আর শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও বিষয়ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতার ১৮টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হয় প্রথম স্থান অধিকারীদের।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান।