Published : 09 Oct 2022, 09:26 PM
উত্তরায় একটি বারে গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানের যৌক্তিকতা নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের তোলা প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, প্রয়োজনে যে কোনো অবৈধ জায়গায় অভিযান বা তল্লাশি চালাতে পারে পুলিশ।
রোববার একটি চোরচক্রকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানানোর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারা অনুযায়ী পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে যে কোনো অভিযান পরিচালনা করতে পারে বলে জানান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরার গরীবে নেওয়াজ অ্যাভিনিউয়ের কিং ফিশার রেস্টুরেন্টের উপরে অবস্থিত লেক ভিউ বারে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযানের যৌক্তকতা নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের তোলা প্রশ্নের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন এ জবাব দেন।
“এটি কোনো বার ছিল না, বাইরে লেখা ছিল এটি রেস্টুরেন্ট,” বলেন তিনি।
ডিবি প্রধান বলেন, “আপনারাই (সাংবাদিক) ভালো জানেন পুলিশ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করতে পারে কি না, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে পারেন কি না।”
আগের রাতের অভিযানের পরদিন শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে ডিবি জানায়, রাতভর ‘আনন্দ-ফুর্তির’ অভিযোগে উত্তরার কিং ফিশার রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৪৫৮ বোতল মদসহ ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ওই বারের মালিককে পাওয়া যায়নি।
পুলিশের এ অভিযানের যৌক্তকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা, যা রোববার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আসে।
অধিদপ্তরের উপ পরিচালক রাশেদুজ্জামান ও উত্তরা এলাকার পরিদর্শক মাহবুবুর রহমানকে উদ্ধৃত করে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, যে বারে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে সেটির লাইসেন্স ছিল। তারা নিয়ম মেনেই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল।
‘কেউ বৈধ বারে অভিযান চালাতে হলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে জানাতে হবে বলে আইনে আছে,’ এমন ব্যাখ্যাও দেন কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। অতিরিক্ত মহাপরিচালক আজিজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে চাননি।
পরে উপপরিচালক রাশেদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পুলিশ উত্তরায় যে ভবনে অভিযান চালিয়েছে সেখানে ‘কিং ফিশার’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট আছে। এই নামে কোনো বার নেই।
তার দাবি, “তবে ওই ভবনের ৫ ও ৬ তলা নিয়ে ‘লেকভিউ’ নামে একটি বার আছে। এই বার বৈধ এবং আমাদের অনুমতি নিয়ে তারা ব্যবসা করছে।
“পুলিশ সেই রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি লেকভিউ বারেও অভিযান চালিয়েছে। বিষয়টি যেহেতু আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে আদালতই এখন বিষয়টি দেখবে।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ডিবির অভিযান নিয়ে তোলা প্রশ্নের বিষয়ে রোববার সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার হারুনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এক সাংবাদিক।
এর জবাবে ‘যে কোনো অবৈধ জায়গায় পুলিশ’ অভিযান চালাতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৩ ধারায় তল্লাশি পরিচালনা কারা করিবেন, কারা করিবেন না স্পষ্ট বলা আছে। পুলিশ প্রয়োজনে অবৈধ কোনো জায়গায় অসামাজিক কার্যকলাপ, মদ বিক্রি বা যে কোনো ঘটনা ঘটলে অভিযান ও তল্লাশি পরিচালনা করিতে পারিবে।
“সব সময় করে আসছি, বড় বড় চালান ধরছি- অবৈধ জায়গায় পরিচালনা করে আসছি এটা নিয়মি।”
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৩ ধারায় ‘পরোয়ানা ব্যতিরেকে তল্লাশি, ইত্যাদির ক্ষমতা’ বিষয়ে বলা আছে।