Published : 15 May 2025, 10:11 AM
৯০ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটের খেলা চলছে। যে কানো সময় বেজে উঠতে পারে শেষ বাঁশি। ম্যাচ তখনও সমতায়। কিন্তু রেয়াল মাদ্রিদের হাল না ছাড়া সেই মানসিকতা জেগে উঠল আবার। ম্যাচশেষের কয়েক সেকেন্ড আগে গোল করে দলকে নাটকীয়ভাবে জেতালেন হাকোবো রামন। ম্যাচের পর তরুণ ডিফেন্ডার বললেন, আজীবন লালন করা একটি স্বপ্ন পূরণ হলো তার।
অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কে এই রামন!
রেয়াল মাদ্রিদ যদি চোটের পর চোটে বিপর্যস্ত না হতো, তাহলে সেরা একাদশ তো বহুদূর, স্কোয়াডেও হয়তো জায়গা হতো না এই রামনের। কিন্তু প্রথমবার সেরা একাদশে জায়গা পেয়েই পুরো সময় মাঠে থেকে শেষ সময়ে গোল করে দলের জয়ের নায়ক ২০ বছর বয়সী ডিফেন্ডার।
লা লিগায় বুধবার কিলিয়ান এমবাপের দারুণ গোলের পর রামনের শেষের গোলে রেয়াল মায়োর্কাকে ২-১ গোলে হারায় রেয়াল।
ম্যাচটি রেয়াল জিততে না পারলে এ দিনই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত বার্সেলোনা। রামনের ওই শেষের গোল কাতালানদের শিরোপা উৎসব পিছিয়ে দেয় অন্তত একটি দিনের জন্য।
মাদ্রিদেরই ঘরে সন্তান রামন। এই শহরে জন্ম ২০০৫ সালে, এখানেই বেড়ে ওঠা। আট বছর বয়সে নাম লেখান রেয়াল মাদ্রিদের একাডেমিতে। এরপর রেয়ালের ‘সি’ দল হয়ে গত বছর অভিষেক হয় ‘বি’ দলে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার গায়ে ওঠে মূল দলের স্বপ্নের জার্সি।
গত জানুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রেড বুল সালসবুর্কের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বদলি হিসেবে মাঠে নেমে মূল দলে অভিষেক হয় তার। লা লিগায় প্রথমবার পা রাখেন গত ৪ মে সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে। ৬৬তম মিনিটে মাঠে নেমে খুব ভালো করতে পারেননি, বরং অস্বস্তিতে পড়েছেন বারবার। ম্যাচ শেষে বিব্রত এই তরুণকে সান্ত্বনা দিতে ও সাহস জোগাতে দেখা গেছে কোচ কার্লো আনচেলত্তিকে।
রামন দারুণ সম্ভাবনাময় তো বটেই। তবে রেয়ালের মতো দলের শুরুর একাদশে থাকার জন্য এখনও প্রস্তুত নন নিশ্চিতভাবেই। কিন্তু কোচের হাতে আর বিকল্পই ছিল না যে! মায়োর্কার বিপক্ষে এই ম্যাচে চোটের কারণে ১২ জন ফুটবলার ছিলেন বাইরে। রক্ষণভাগের মূল ফুটবলারদের একজনকেও পাননি কোচ। উপায় না পেয়েই রামনকে শুরুর একাদশে জায়গা দেন প্রথমবার। গোল ঠেকানো তার মূল কাজ হলেও উপলক্ষ তিনি রাঙিয়ে রাখলেন গোল করে।
ম্যাচের পর রেয়াল মাদ্রিদ টিভিতে রামন শোনালেন তার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার গল্প।
“এই অনুভূতি ব্যাখ্যাতীত। গোটা জীবন এই মুহূর্তটির স্বপ্ন দেখেছি। এই জার্সি গায়ে রাখতে চাই জীবনের শেষ পর্যন্ত এবং এই জার্সি গায়ে প্রথম গোলটি এর চেয়ে ভালোভাবে আর হতে পারত না…।”
ম্যাচের একাদশ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে রেয়াল। ৬৮তম মিনিটে একক প্রচেষ্টার গোলে দলকে সমতায় ফেরান এমবাপে। শেষ ২০-২৫ মিনিটে তো আক্রমণের স্রোত বইয়ে দিয়ে একের পর এক সুযোগ তৈরি করতে থাকে রেয়াল। কিন্তু কখনও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন ফুটবলাররা, কখনও বাধার দেয়াল হয়ে দাঁড়ান মায়োর্কার গোলকিপার লিওনার্দো রোমান রিকেলমে।
গোটা ম্যাচে ৭২ শতাংশ সময় বল নিজেদের কাছে রেখে গোলে ৩৯টি শট নেয় রেয়াল। এর ১৩টি ছিল লক্ষ্যে। রোমান আটকে দেন ১১টিই! কিন্তু শেষ সময়ে রামনকে থামাতে পারেননি রোমান।
ম্যাচের পর প্রতিপক্ষের প্রশংসা করে নিজেদের উচ্ছ্বাসের কথা বললেন রেয়ালের নায়ক রামন।
“মায়োর্কা খুব ভালো দল। তারা গোল করার পর একটু নিচে নেমে গেছে। আমরা অনেক অনেক সুযোগ তৈরি করেছি। তাদের গোলকিপার অসাধারণ ম্যাচ খেলেছে। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা জিততে পেরেছি।