Published : 14 Feb 2025, 04:39 PM
বাবা যেহেতু গ্রেট রোনালদিনিয়ো, প্রত্যাশার আকাশচুম্বি চাপ তাই জোয়াও মেন্দেসের ওপর ছিল শুরু থেকেই। আর সেটা যে অস্বাভাবিক নয়, সেটাও ছেলেবেলা থেকে বুঝতেন জোয়াও। সীমাহীন প্রত্যাশার চাপ এড়িয়ে, নিজের মতো করে বেড়ে ওঠার, নিজের পরিচয়ে পরিচিত হওয়ার পথই তিনি বেছে নেন। সেই লক্ষ্যে বার্সেলোনা ছেড়ে পাড়ি জমান বার্নলিতে।
ইএসপিএন ব্রাসিলিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই পথচলার খুটিনাটি মনের আগল খুলে বলেছেন জোয়াও।
ফুটবলের আঙিনায় পা রাখতেই তার কাঁধে চেপে বসে ‘রোনালদিনিয়োর ছেলে’ নামক চাপ। তাতে হাসঁফাস অবস্থা। ক্রুজেইরো, বার্সেলোনার যুব দলে খেলার সময় তা ভীষণভাবে অনুভব করতে থাকেন জোয়াও। তাই মনস্থির করেন, পথ খুঁজে নেবেন নিজের মতো করে। গত অগাস্টে দুই বছরের চুক্তিতে যোগ দেন ইংলিশ ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপের ক্লাব বার্নলিতে। এখনও তাদের মূল দলে খেলার সুযোগ পাননি ১৯ বছর বয়সী এই উইঙ্গার।
অচিরেই সেই সুযোগ মিলবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে বার্নলিতে এসে নানা সমস্যার মাঝেও অন্যরকম স্বস্তি অনুভব করছেন জোয়াও। সাক্ষাৎকারে তিনি তুলে ধরেছেন ফুটবলার হয়ে ওঠা, নিজের চাওয়াসহ অনেককিছু।
“অন্যকিছু নয়, আমি জোয়াও হতে চাই। আমি কখনই আমার বাবার মতো হতে চাইনি। কখনই না। তাই তিনি যেখানে (বার্সেলোনায়) খেলেছেন, সেখান থেকে একটু দূরে থাকতে চাই। আমি মনে করি, এটা (বার্নলিতে আসা) ভালো একটা শুরু ছিল এবং আমার জন্য ভালো একটা পদক্ষেপ।”
“আমার মনে হয়, আপনি যেটা কখনই হতে পারবেন না, সেটা আপনি পছন্দ করেন বা না করেন, বাইরের লোকেরা চায়, আপনি সেটাই হন। তাই না? এখানে (বার্নলি) এসে ভালো হয়েছে। যদিও শুরুতে সবকিছু কঠিন ছিল এবং আমি তা অস্বীকারও করছি না। এমনকি এখনও কঠিন, বিশেষ করে শীতকালে। জায়গাটা উত্তরে, শীতের সময় একটু বেশিই খারাপ অবস্থা (আবহাওয়া) হয়। যদি গ্লাভস এবং দুটো মোজা পরি, তাহলে আমরা মানিয়ে নিতে পারি।”
বার্নলির চারপাশের আবহ, ফুটলের সঙ্গে মানুষের সংযোগ, খেলাটির প্রতি ভালোবাসা, বার্নলির ম্যাচ হলেই গ্যালারিতে উপচে পড়া সমর্থকের উপস্থিতি- সবকিছু ভীষণ মনে ধরেছে জোয়াওয়ের।
বাবা রোনালদিনিয়োর পথ ধরে ফুটবলের আঙিনায় ছাপ রেখে যাওয়ার স্বপ্ন জোয়াওয়েরও আছে। তবে তিনি বিখ্যাত বাবার সন্তান হওয়ার চাপ নিতে চান না। ছেলের জন্য বাস্তবতা কতটা কঠিন হবে, বুঝতে পেরে তার বাবা-মা নাকি মাঝে এমনও চেয়েছেন যে, ছেলে ফুটবলের সবুজে পা না বাড়াক!
“আমার বাবা ও মা আসলে কখনই চাননি আমি এই পথ অনুসরণ করি। কেননা, তারা জানতেন, আমার সাথে কী হবে। কিন্তু যখন আবেগ উপচে পড়ে, তখন কিছু করার থাকে না।”
“এ পর্যন্ত যারা এই খেলাটি খেলেছে, তাদের মধ্যে আমার বাবা যদি সেরা নাও হয়, তাহলে সেরাদের একজন ছিলেন। তার ছেলে হিসেবে, তাকে নিয়ে কথা বলতে পারাও আমার জন্য গর্বের। আর আমি চেষ্টা করি, নিজের কাজটি করার। নিজের কাজের ভেতরে আমি বাবাকে আনার চেষ্টা করি না। নিজের মতো করে, চাপহীনভাবে নিজের ফুটবলটা খেলতে চাই আমি।”