Published : 27 Jun 2025, 11:12 AM
১৯৩ সদস্যের বিশ্ব সংস্থাটি যখন প্রতিষ্ঠাকালীন নথি স্বাক্ষরের ৮০তম বার্ষিকী পালন করছে তখন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, জাতিসংঘ সনদ এখন এমন আক্রমণের মুখে যা আগে কখনোই দেখা যায়নি।
“আমরা সবাই এ প্যাটার্নের সঙ্গে খুব ভালোভাবে পরিচিত: যখন পছন্দসই হয় তখন সনদ অনুসরণ করো, আর যখন হয় না, তখন এড়িয়ে যাও।
“জাতিসংঘের সনদ ঐচ্ছিক নয়। এটি পছন্দমতো খাবার বেছে নেওয়ার মেন্যু কার্ড নয়। এটা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূল ভিত্তি,” সনদ স্বাক্ষরের ৮০তম বার্ষিকী উদ্যাপনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এক আয়োজনে বৃহস্পতিবার এমনটাই বলেন গুতেরেস।
এমন এক সময়ে মহাসচিব এ কথা বললেন যখন নিয়মিতই এক দেশ আরেক দেশের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ সনদ লঙ্ঘনের অভিযোগ আনছে; লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে পরিণতি ভোগের ঘটনাও বেশ বিরল, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ইউক্রেইন ও গাজায় যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ায় যথাক্রমে রাশিয়া ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সনদ লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি, যুদ্ধ দুটি এখনও চলছে।
গত সপ্তাহে ইরান তাদের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ সনদ লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ এনেছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রও বলছে, সনদ মেনে আত্মরক্ষার খাতিরেই তারা ওই হামলা চালিয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জন্ম নেওয়া জাতিসংঘের সনদে ১৯৪৫ সালের ২৬ জুন প্রথম ৫০টি দেশ স্বাক্ষর করেছিল।
চার মাস পর আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া এ সনদের লক্ষ্য ছিল ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যুদ্ধ থেকে রক্ষা, মানব মর্যাদা ও পুরুষ-নারীর সমঅধিকার এবং বড় ও ছোট দেশের সমান অধিকার রক্ষা করা।
এ সনদের ওপর ভিত্তি করে গত ৮ দশকে জাতিসংঘ অনেক ভালো কাজ করলেও নিজের সম্ভাবনাকে খাটো করে এমন ঘাটতিগুলো এড়িয়ে যাওয়া বৈশ্বিক এ সংস্থাটির উচিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঊর্ধ্বতন মার্কিন কূটনীতিক ম্যাকয় পিট।
“আমাদের জন্য এটা খুবই দুঃখজনক যে জাতিসংঘ তার প্রতিষ্ঠাকালীন উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়েছে। একাধিক মহাদেশে যুদ্ধ চলছে, তার ভিত্তিতে বললাম।
“এই প্রতিষ্ঠানের প্রাণকেন্দ্রে অবশ্যই জাতিসংঘ সনদের মূলনীতিগুলো থাকতে হবে, এটি কেবল ভালো একটি পৃথিবীর লক্ষ্যে করা চুক্তি নয়, এর পাশাপাশি এটি বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে সক্রিয়ও থাকতে হবে,” বলেছেন তিনি।