Published : 15 Feb 2023, 11:55 PM
মশা মারতে দরপত্র ছাড়াই কীটনাশক কেনার অভিযোগের বিষয়ে দুদকের অভিযান চালানোর পর এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।
রোববার এ কমিটি গঠন করা হলেও বিষয়টি বুধবার জানাজানি হয়েছে।
নগর সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৯ ফেব্রুয়ারি দুদকের একটি দল মশার ওষুধ ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে সিটি করপোরেশনে এসেছিল। মশার ওষুধ ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করতে তিন সদস্যের ওই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে মেয়র মহোদয়ের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।”
তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল ৩ ও ৪) জোনায়েদ কবীর সোহাগকে।
৯ ফেব্রুয়ারি অভিযান শেষে দুদকের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, মশার ওষুধ কেনায় অনিয়মের অভিযোগের ‘সত্যতা’ পাওয়া গেছে। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তারা।
দরপত্র ছাড়াই এক ঠিকাদারের কাছ থেকে বারবার মশা মারার ওষুধ কেনার অনিয়মের বিষয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অভিযানে দুদকের এনফোর্সমেন্ট দল দেখতে পায়- ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স বেঙ্গল মার্ক ইন্টারন্যাশনালের মালিক অরভিন সাকিব ইভানকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১৬ বার কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।
দরপত্র ছাড়াই মশা মারার ওষুধ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে অভিযানে দুদক
এ তথ্য জানিয়ে তিন সদস্যের ওই এনফোর্সমেন্ট দলের প্রধান দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম ১ এর সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ‘বেইআইনিভাবে’ কাজ দিয়ে ‘লাভবান করার’ উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছে।
অভিযানে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দুদক কর্মকর্তারা দেখতে পান, ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মশার ওষুধ ক্রয়ে বরাদ্দ টাকা থেকে ১৬ বারে মোট ৭৭ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ টাকার ওষুধ কেনা হয়েছে।
গণখাতে ক্রয়বিধি (পিপিআর-২০০৮) অনুসারে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে অনুসরণ না করে সিসিসি পিপিআর-২০০৮ এর বিধি ৭৪(১) ও বিধি ৭৭ লঙ্ঘন করে সামগ্রিক চুক্তিকে ছোট ছোট মূল্য সীমায় (প্রতিবারে ৫ লাখ টাকার কম মূল্যের দরপত্র আহ্বান করে) ও সংখ্যায় ভাগ করে ওষুধ কিনেছে বলেও জানিয়েছিলেন দুদক কর্মকর্তা মো. এমরান হোসেন।
গণখাতের ক্রয়বিধির (পিপিআর) ৭৬ (ট) ধারা অনুসারে- অতিজরুরি বা প্রয়োজনীয় পণ্য, কার্য এবং সেবা সরাসরি কেনা যায়। তবে এ প্রক্রিয়ায় প্রতিটি ক্ষেত্রে পাঁচ লাখ টাকার বেশি কেনাকাটা করা যায় না।
মশা মারার ওষুধ কিনতে খরচ একবারে পাঁচ লাখ টাকার বেশি না দেখাতে কয়েকটি লটে ভাগ করে কেনা হয় বলে অভিযোগ দুদকের।
মেসার্স বেঙ্গল মার্ক ইন্টারন্যাশনালের মালিক অরভিন সাকিব ইভান নগর ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক। তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। নাছির মেয়র থাকাকালে মশার ওষুধ সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত হন সাকিব।
অরভিন সাকিব ইভানের দাবি, নিয়ম মেনে জরুরি প্রয়োজনে গণখাতের ক্রয় বিধি ৭৬ (ট) অনুসারে সর্বনিম্ন দর দিয়েই তিনি সিটি করপোরেশনকে ওষুধ সরবরাহ করেছেন। সেখানে নিয়মের কোনো ব্যত্যয় হয়নি।