Published : 02 Jun 2025, 09:30 AM
বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও ভোলার বিভিন্ন স্থানে কোরবানির পশুর হাট জমে ওঠেছে।
এ বছর জেলায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে ১৪৭টি হাট বসেছে।
খামারিরা বলছেন, গ্রামের হাটগুলোতে ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি থাকায় বড় গরু নিয়ে কিছুটা চিন্তিত তারা।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার সদর উপজেলায় ১৬টি, দৌলতখানে ১১টি, বোরহানউদ্দিনে ১৬টি, তজুমদ্দিনে নয়টি, লালমোহনে ৩১টি, চরফ্যাশনে ৫০টি এবং মনপুরায় ১৩টি হাটে গরু-ছাগল বিক্রি হচ্ছে।
সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গজারিয়া বাজার সংলগ্ন বালিয়া মিঞা বাড়ির সামনের খোলা মাঠে বসা পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেও বিভিন্ন এলাকা থেকে খামারিরা তাদের গরু-ছাগল বিক্রির জন্য এনেছেন। সরবরাহ বেশি থাকায় হাটের আশপাশের সড়কেও পশু নিয়ে বসেছেন ক্রেতারা।
শতাব্দী প্রাচীন বালিয়া মিঞা বাড়ির পশুর হাটে কোনো ইজারাদার নেই। ক্রেতা-বিক্রেতা কাউকে কোনো খাজনা দিতে হয় না। এখানে বসানো হয় না টেবিল-চেয়ার, নেই কোনো চাঁদাবাজি। প্রতি হাটে পাঁচ থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত পশু বিক্রি হয় বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
খামারি আব্দুল মান্নান, মফিজুর রহমান ও আবুল কালাম জানান, দিনে দিনে পশু খাদ্যের দাম বাড়ছে। ফলে গরু লালন-পালনের খরচ বাড়ছে। সেই তুলনায় তাদের লাভ থাকছে না।
উত্তর বালিয়া গ্রামের শাহে আলম শরীফ বলেন, বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও ক্রেতা সমাগম ভাল। সরকার পরিবর্তনের পর বড় গরুর চাহিদা কমেছে বলে মনে হচ্ছে তার।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার্থে বালিয়া মিঞা বাড়িতে শনি, সোম ও বুধবার হাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অন্যদিকে এবার জেলায় চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত সাড়ে ১২ হাজার পশু প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম খাঁন জানান।
তিনি জানান, জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার ২৫৩টি। বিপরীতে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে এক লাখ দুই হাজার ৭৬৯টি কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত পশু অন্য জেলায় পাঠানো যাবে।
এদিকে গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় খামারিদের খরচ অনেক বেড়ে গেছে বলে জানালেন ছোট চরসামাইয়া গ্রামের খামারি মো. হারুন। তিনি জানান, চার বছর ধরে তিনি গরু লালন-পালন করছেন। বড় আকারের গরু লালন-পালন করতে যে খরচ সেই অনুযায়ী দাম পাওয়া যায় না। ফলে বড় গরুর প্রতি আগ্রহ কম খামারিদের।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষে স্থায়ী-অস্থায়ী ১৪৭টি হাটে ২৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। তারা হাটে বিক্রি করতে আনা গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসা দিচ্ছেন।