Published : 04 Jul 2025, 05:26 PM
পুরনো এবং ঘরে ফেলে রাখা অব্যবহৃত জামদানি শাড়ি কাজে লাগিয়ে প্যাচওয়ার্ক, গহনা আর গৃহসামগ্রী তৈরি করেছেন উদ্যোক্তারা।
সেগুলো নিয়ে মেলাও বসেছে ঢাকার লালমাটিয়ায়; পাশাপাশি নানা রং ও নকশার জামদানি শাড়িও রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য।
উদ্যোক্তারা বলছেন, কাপড়গুলোকে পুনরায় ব্যবহার করতেই তাদের এই উদ্যোগ; যাতে সেগুলো নষ্ট না হয়।
শুক্রবার লালমাটিয়ায় নারীদের আইনি সহায়তা এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা ‘শান্তিবাড়ি’ তাদের কার্যালয়ে ‘ঐতিহ্যবাহী জামদানি শিল্প ও নারী উদ্যোক্তাদের’ বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
এতে অংশ নিয়েছেন তিন নারী উদ্যোক্তা। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এ মেলা চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।
‘বেনে বৌ জামদানি’ স্টলে রয়েছে জামদানি শাড়ি রিসাইকেল তৈরি করা হাতের চুড়ি, টিপ, টেবিল ল্যাম্প, প্যাচওয়ার্ক। এর বাইরে তারা জামদানি কাপড়ে তৈরি শাড়ি, ব্যাগ, কোটি, জুতা বিক্রি করছেন।
‘বেনে বৌ’ এর উদ্যোক্তা ফারহানা মুনমুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিটা নারীর কাছে জামদানি থাকে। একটা সময় সেগুলো ফেলে দেওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না। সে জায়গা থেকেই রিসাইকেলের চিন্তাটা।
“কাজটা যে করছি, সেটার প্রচার আর আরও কী করা যেতে পারে এই উদ্দেশ্য নিয়েই মেলায় আসা।”
স্টলটিতে চার থেকে সাত হাজার টাকা দামে শাড়ি আর গহনা মিলছে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে।
‘বুনিয়াতে’ বিক্রি হচ্ছে জামদানি কাপড় দিয়ে তৈরি গহনা আর গৃহসামগ্রী। সেগুলোর দাম পরছে ৪০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত।
‘বুনিয়ার’ উদ্যোক্তা আফরিন আহমেদ বলেন, জামদানীকে সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতেই তার এই প্রয়াস।
“আমাদের শিল্পটাকে বাঁচাতে হতে তাঁতীদের জীবিকা বাঁচাতে হবে। শাড়ি হিসেবে রাখলে সবাই কিনবে না, এসব বিবেচনা করে চিন্তা করে প্রতিদিন ব্যবহার করা যায় এমন জিনিস তৈরির চিন্তা করলাম। এর ফলে দামটাও অনেক কমে আসছে, ঐতিহ্যটাও তারা গ্রহণ করল।”
‘পালং খ্যিয়ং’ এ বিক্রি হচ্ছে জামদানি শাড়ি আর রিসাইকেল করা শো পিস। এগুলোর বিক্রয়মূল্য ধরা হয়েছে সাড়ে ছয় হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা।
জামদানি আর নিজের পণ্যের প্রচারের জন্যই মেলায় আসার কথা বললে পালং খ্যিয়ংয়ের উদ্যোক্তা জিনিয়া রহমান।
মেলা থেকে কেনাকাটা করতে গুলশান থেকে এসেছেন আফসানা রহমান। দেশিয় ঐতিহ্যের প্রতি টান থেকেই মেলায় আসার কথা বললেন তিনি।
আফসানা বলেন, “জামদানি কাপড়ের টিপ কিনেছি, ঘুরে দেখছি আরও কি কেনা যায়। আমাদের সিম্বোলিক পোশাক জামদানি, এটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। একারণে মানুষদের বেশি বেশি কিনতে হবে।”
‘শান্তিবাড়ির প্রোগ্রাম’ এক্সিবিউটিভ সাবরিনা শারমিন বাঁধন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের পৃষ্ঠপোষকতার জন্যই তাদের এই আয়োজন ।যেটি তারা বরাবরই করে আসছেন।
“এটা নারীদের জন্য ডেডিকেট করা। জামদানি ঐতিহ্য, এটা নিয়ে আজকাল অনেক কিছু হচ্ছে; এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে জামদানি নিয়ে যা কিছু তা এক ছাদের নিচে নিয়ে আসার জন্য এ প্রয়াস।”