Published : 04 Jun 2025, 08:05 PM
পঞ্চগড়ে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। এবার হাটগুলোতে বড় গরুর চেয়ে ছোট গরুর চাহিদা বেশি। তবে তুলনামূলক কম দামে ক্রেতা গরুর কিনতে পেরে খুশি হলেও হতাশ বিক্রেতা।
ব্যবসায়ী ও খামারিরা বলছেন, হাটে ব্যাপক গরু উঠলেও সে অনুযায়ী ক্রেতা কম। আর এতে গরুর দামও পড়ে গেছে। বেচাকেনা নিয়ে তাদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। তবে ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে কেনাবেচা বাড়বে বলে আশা সবার।
পঞ্চগড় জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলায় মোট ১৬টি ছোট বড় গরুর হাট রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার রাজনগর এবং বোদা উপজেলার নগরকুমারী হাট সবচেয়ে বড়।
এ জেলায় ১৫ হাজারের বেশি খামারি রয়েছে। এসব খামারিদের ঘরে গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়াসহ মোট এক লাখ ৪৫ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে; যা চাহিদার চেয়ে বেশি।
হাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেনারি চিকিৎসকের তৎপরতা দেখা গেছে।
জেলার সবচেয়ে বড় হাট হিসেবে পরিচিত বোদা উপজেলার ‘নগরকুমারী’ পশুর হাট। বুধবার ওই হাটে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয়রা ছাড়াও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে খামারিরা হাটে গরু নিয়ে এসেছেন। বড়, ছোট-মাঝারি থেকে সব ধরনের গরু উঠেছে।
আকারভেদে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত গরু বিক্রি হচ্ছে। তবে গরুর তুলনায় ক্রেতা একটু কম। কেনার চেয়ে দেখা ও দাম শোনার মানুষের সংখ্যাই বেশি। আবার বড় গরুর চাহিদা একটু কম। তবে কম দামে গরু কিনে ক্রেতারা গুরু খুশি হলেও আশানুরূপ দাম না পেয়ে হতাশ বিক্রেতারা।
ক্রেতা কামরুল ইসলাম বলেন, “আজকে হাটে অনেক গরু উঠেছে। গতবারের চেয়ে তুলনামূলক দাম কম। আমি একটি গরু কিনেছি। এটি অন্য জায়গায় বিক্রি করলে লাভবান হব। তবে ছোট গরুর চাহিদা বেশি।”
আরেক ক্রেতা আলম বলেন, “কোরবানির ঈদ মাত্র কয়েকদিন বাকি আছে। দেখে শুনে গরু ক্রয় করব। তবে এবার গরুর চাহিদা কম হলেও হাটে অনেক গরু দেখছি। বড় গরু একটা না কিনে প্রয়োজনে দুই-তিনটা কিনব। গতবারের চেয়ে দামও একটু কম আছে।”
নগরকুমারী হাটের ইজারাদার শাহানাজ বেগমের ভাগনে মানসিব বলেন, প্রতি শনি ও বুধবার এই হাট বসে। উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় গরুর হাটগুলো একটি এই হাট। এর মধ্যে গরুর হাটটি বেশ জমে উঠেছে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে।
ছোট-বড় মিলিয়ে ১১টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন ব্যবসায়ী রবিউল হোসেন। তিনি বলেন, এই হাটে অনেক গরু উঠেছে। কিন্তু ক্রেতা অনেক কম। তবে দেখার মানুষের সংখ্যা বেশি। সকাল ১০টায় হাটে এসেছেন তিনি। ২টা পর্যন্ত মাত্র একটি গরু বিক্রি করেছেন।
বাকি গরুগুলো বিক্রি হবে কি-না বুঝতে পারছেন না; অথচ গত বছর এই সাইজের গরুর চাহিদা ও দাম দুটিই ভালো ছিল বলে জানান এই ব্যবসায়ী।
পঞ্চগড় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. বাবুল হোসেন বলেন, এবার জেলায় কোরবানি উপযোগী পশুর চাহিদা আছে এক লাখ ২৫ হাজার। এর বিপরীতে প্রস্তুত আছে অন্তত এক লাখ ৫০ হাজার পশু।
তিনি বলেন, “কোরবানির জন্য সুস্থ পশু সরবরাহ করতে রাজনগড় হাট ও নগরকুমারী হাটে মেডিকেল টিম কাজ করছে। কোনো গরু বা পশু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক সেবা দেওয়া হচ্ছে।”