Published : 22 Apr 2020, 09:32 PM
মঙ্গলবার ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়নের তালিকাভুক্ত ১০৫ জন কৃষকের মাঝে কৃষি প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণের কথা ছিল। কিন্তু কৃষকরা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের সামনে এ দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও বীজ ও সার পায়নি।
ইউনিয়নের ভূতবাড়ি গ্রামের কৃষক হাবিবর রহমান বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। তালিকায় আমাদের নাম থাকলেও বীজ ও সার পাইনি। অফিসাররা তালিকা পরিবর্তন করার কথা বলে সবাইকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।”
পুকুরিয়া গ্রামের শামছুল হক, চাঁন মিয়া ও রঘুনাথপুর গ্রামের আমজাদ হোসেনসহ অর্ধশত কৃষক একই অভিযোগ করেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় জানায়, ধুনট উপজেলায় আউশ ধান ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওয়ায় পৌরসভা ও দশ ইউনিয়নের ৮০০ জন কৃষকের জন্য এ সার, বীজ ও নগদ ৫৫০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এসব কৃষকের তালিকা তৈরি করতে পৌর ও ইউনিয়ন কৃষি কমিটি গঠন করেন। কমিটিতে সংশ্লিষ্ট মেয়র, চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর/সদস্য এবং একজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ওই কমিটি কৃষি প্রণোদনা দিতে উপজেলার ৮১০ জন উপকারভোগী কৃষকের তালিকা চূড়ান্ত করেন। গত ১৯ এপ্রিল থেকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ে বীজ ও সার বিতরণ করা শুরু হয়।
ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুল করিম আপেল বলেন, “কৃষকরা বীজ ও সার না পেয়ে ফিরে এসেছে। এ বিষয়ে সকল ইউপি সদস্য স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দেওয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুশিদুল হক বলেন, ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়নে কৃষি প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ করতে ইউনিয়ন কৃষি কমিটি ১০৫ জনের তালিকা চূড়ান্ত করে পাঠিয়েছেন। সেই তালিকা অনুযায়ী মঙ্গলবার বীজ ও সার বিতরণ করতে ওই ইউনিয়নের কৃষকদের আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়নে বীজ ও সার বিতরণ বন্ধ রাখতে বলায় কৃষকদের ফিরে যেতে হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, “ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়নের কৃষকদের তালিকা তৈরি করতে কিছুটা অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। এ কারণে ওই ইউনিয়নে বীজ ও সার বিতরণ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।”
এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তার ভাষ্য, “তালিকার বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটি প্রতিবেদনে বলেছে, কৃষকদের তালিকা সঠিক ছিল এবং তাতে কোনো অনিয়ম পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার থেকে সার ও বীজ দেওয়া হবে।”
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা জানান, বীজ ও সার বিতরণের নির্ধারিত দিনে ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়নের তালিকা তৈরি নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হবে বলে জানান তিনি।