Published : 10 Jul 2024, 05:44 PM
জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি গ্রহণ করার ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে চীন, এমনই দেখা গেছে নতুন এক জরিপে।
এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, ২০২২ সালের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি উন্মোচনের পর এ উদীয়মান প্রযুক্তি নিয়ে গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছে দেশটি।
মার্কিন এআই ও সফটওয়্যার কোম্পানি ‘এসএএস’ ও গবেষণা কোম্পানি ‘কোলম্যান পার্কেস রিসার্চ’ পরিচালিত এ জরিপে অংশ নেন গোটা বিশ্বের বিভিন্ন শিল্পের এক হাজার ছয়শ জন নীতিনির্ধারক।
এর মধ্যে ৮৩ শতাংশ চীনা জবাবদাতা জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা জানিয়েছেন, যা মূলত এসেছিল চ্যাটজিপিটির হাত ধরে।
এ সংখ্যা জরিপে অংশ নেওয়া বাকি ১৬টি দেশ ও অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও, যেখানে জেনারেটিভ এআই গ্রহণের কথা বলেছেন ৬৫ শতাংশ জবাবদাতা।
জরিপ অনুসারে, এ প্রযুক্তি ব্যবহারের বৈশ্বিক গড় ছিল ৫৪ শতাংশ।
আর জরিপটি চালানো হয়েছে ব্যাংকিং, বীমা, স্বাস্থ্যসেবা, টেলিযোগাযোগ, উৎপাদন, বিপণন ও শক্তির মতো খাতগুলোয়।
এর ফলাফলে জেনারেটিভ এআই খাতে চীনের দ্রুত অগ্রসর হওয়ার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে চ্যাটজিপিটি উন্মোচনের পরপরই নিজেদের মোমেন্টাম বাড়িয়েছে দেশটি, যেখানে বেশ কিছু চীনা কোম্পানি জেনারেটিভ এআইভিত্তিক চ্যাটবটের নিজস্ব সংস্করণ বাজারে এনেছে।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘের ‘ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন’-এর এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জেনারেটিভ এআই পেটেন্ট করার দৌড়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে চীন, যেখানে ২০১৪ ও ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে ৩৮ হাজারের বেশি আবেদন জমা দিয়েছে দেশটি। এর বিপরীতে, একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র আবেদন জমা দিয়েছে ছয় হাজার ২৭৬টি।
অন্যদিকে, চীনে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে বেশ কিছু নেতৃস্থানীয় জেনারেটিভ এআই সেবাদাতা কোম্পানি, যার মধ্যে আছে ওপেনএআইও। এর কারণ হল, বাইটড্যান্সের মতো টেক জায়ান্ট ও ‘ঝিপু’র মতো স্টার্টআপ কোম্পানির সহায়তায় দেশটি নিজেই একটি শক্তিশালী স্থানীয় শিল্প গড়ে তুলেছে।
চীনে জেনারেটিভ এআইয়ের জন্য এন্টারপ্রাইজভিত্তিক কাঠামো গ্রহণ এ প্রযুক্তি নিয়ে চলমান ‘প্রাইস ওয়ার’কে ত্বরান্বিত করতে পারে। ফলে, ব্যবসার জন্য তৈরি বিভিন্ন লার্জ ল্যাংগুয়েজ মডেল কেনার খরচ আরও কমে আসতে পারে।
এসএএস প্রতিবেদনে বলেছে, ‘কন্টিনিউয়াস অটোমেটেড মনিটরিং (সিএএম)’ প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও গোটা বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে চীন। আর একে তারা ব্যাখ্যা করেছে ‘জেনারেটিভ এআই টুলের বিতর্কিত তবে বহুল ব্যবহৃত ঘটনা’ বলে।
এসএএস-এর ‘অ্যাপ্লায়েড এআই অ্যান্ড মডেলিং’ বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট উডো এসজিলাভো বলেছেন, এ প্রযুক্তি দিয়ে ব্যবহারকারীর গতিবিধি, আচরণ ও যোগাযোগ সংশ্লিষ্ট বিশাল ডেটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা যায়।
ফলে, পরবর্তীতে গিয়ে প্রাইভেসি লঙ্ঘনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে, যেখানে কী পরিমাণ ডেটা সংগ্রহ হচ্ছে বা কীভাবে সেটি ব্যবহার করা হচ্ছে, সে সম্পর্কে জানতেই পারবেন না ব্যবহারকারী।
“সিএএম-এ ব্যবহার করা বিভিন্ন অ্যালগরিদম ও প্রক্রিয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিমালিকানাধীন। আর সেটা স্বচ্ছও থাকে না,” যোগ করেন এসজিলাভো।
“তাই সিএএম-এর অপব্যবহার বা ত্রুটির জন্য কোনো স্বত্বাকে দোষী সাব্যস্ত করাও জটিল হয়ে ওঠে।”