Published : 26 Oct 2023, 04:15 PM
থ্রেডস নিয়ে মেটার আগ্রাসী প্রচারণা অবশেষে ফলাফল দেখাচ্ছে। অ্যাপটিতে ‘প্রায়’ ১০ কোটি মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী থাকার দাবি করেছেন মেটা প্রধান মার্ক জাকারবার্গ।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাকারবার্গ আশা করছেন, আগামী দুই বছরে একশ কোটি ব্যবহারকারীর লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানোর ‘ভালো সম্ভাবনা’ আছে অ্যাপটির।
“আমি দীর্ঘ সময় ধরে চিন্তা করছি যে এমন এক কথোপকথনমূলক অ্যাপ থাকা উচিৎ, যেখানে একশ কোটি ব্যবহারকারী থাকবে। থ্রেডসকে আরও কয়েক বছর চালু রাখলে সেই পর্যায়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।” --মেটার তৃতীয় প্রান্তিকের আয়ের হিসাব দেওয়ার সময় বলেন জাকারবার্গ।
জুলাইয়ে থ্রেডস চালুর পর থেকেই এর ব্যবহাকারী সংখ্যার দিকে ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখা হচ্ছে। আর উন্মোচনের প্রথম সপ্তাহেই ১০ কোটি সাইন আপের মাইলফলক অর্জন করেছিল এটি। তবে, অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের চেয়ে সীমিত ফিচার থাকা ও কেবল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোস্ট দেখানো নিয়ে ব্যবহারকারীরা পরবর্তীতে অ্যাপটি সম্পর্কে অভিযোগ জানাতে শুরু করেন।
এর পর থ্রেডসে ধীরে ধীরে বিভিন্ন নতুন ফিচার চালু করেছে মেটা। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় এক্স-এর মালিক ইলন মাস্ক নিজস্ব সামাজিক মাধ্যমে লিংকের শিরোনাম সরিয়ে ফেলার মতো একাধিক ‘বিতর্কিত’ পরিবর্তন আনার কারণেও ব্যবহারকারীর সম্পৃক্ততা বেড়েছে থ্রেডসে।
এই সপ্তাহে মার্কিন বাণিজ্য দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে উঠে আসে, সম্প্রতি এক্স-এর সাবেক ‘ক্ষমতাধর ব্যবহারকারীদের’ সফলভাবে আকৃষ্ট করতে পেরেছে থ্রেডস।
থ্রেডসের অগ্রগতি মেটার একমাত্র সাফল্য নয়। এবারের প্রান্তিকে তিন হাজার চারশ কোটি ডলারের বেশি আয় করেছে মেটা, যা গত বছরের চেয়ে ২৩ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া, প্রায় চারশ কোটি মাসিক ব্যবহারকারী থাকা একমাত্র সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিও এটি, যা কোম্পানির জন্য নতুন এক মাইলফলক।
বিশ্লেষকদের সঙ্গে আয়ের হিসাব চলাকালীন জাকারবার্গ বলেন, সম্প্রতি ‘দক্ষতার’ দিকে মনযোগ দেওয়ায় গত বছর ২০ হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে মেটা। আর ‘চলমান অস্থির জগতে’ কার্যকর ফলাফল দেখিয়েছে কোম্পানির এই পরিকল্পনা।
জাকারবার্গ আরও বলেন, এখন থেকে জেনারেটিভ এআইয়ের দিকে মনযোগ বাড়াবে মেটা।
“আমরা বেশ কয়েকটি এআই বহির্ভূত প্রকল্পের অগ্রাধিকার কমিয়ে এর বদলে কর্মীদের এআই নিয়ে কাজ করার দিকে মনযোগ দেব।” --বলেন জাকারবার্গ।
তবে, এআইভিত্তিক প্রকল্পের কারণে মেটাভার্সের খরচ বাড়বে না। মেটার এআর ও ভিআর নিয়ে কাজ করা বিভাগ ‘রিয়ালিটি ল্যাবস’ এরইমধ্যে কয়েকশ কোটি ডলারের লোকসান করেছে।
এ প্রান্তিকে রিয়ালিটি ল্যাবস থেকে মেটা দুই কোটি ১০ লাখ ডলার আয় করলেও এর বিপরীতে ৩৭০ কোটি ডলার ও ২০২৩ সালের শুরু থেকে এক হাজার একশ কোটি ডলারের বেশি অর্থ হারিয়েছে।
মেটার প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সুসান লি বলেন, ‘অগমেন্টেড/ভার্চুয়াল রিয়ালিটিভিত্তিক বিভিন্ন পণ্য বিকাশ ও কোম্পানির ইকোসিস্টেম উন্নত করার লক্ষ্যমাত্রা’ থাকায় আসন্ন বছরগুলোয় লোকসানের পরিমাণ আরও বাড়বে।
সম্প্রতি মেটার এআর ও ভিআর প্রকল্পে এআই প্রযুক্তি যোগ করার প্রচেষ্টা চালানো জাকারবার্গ বলেন, কোম্পানির সকল সেবাকে নতুন রূপ দেওয়ার সম্ভাবনা আছে এ প্রযুক্তির।
“আমাদের তৈরি বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনতে পারে জেনারেটিভ এআই।”