Published : 19 Jul 2023, 07:45 PM
হঠাৎ করেই জমে উঠেছে গল টেস্টের লড়াই। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা তেমন ভালো হয়নি পাকিস্তানের। স্পিনার প্রবাথ জয়াসুরিয়ার বোলিংয়ে নাটকীয় কিছুর সম্ভাবনা জাগিয়েছে শ্রীলঙ্কা। জয়ের পাল্লা অবশ্য হেলে পাকিস্তানের দিকে, তবে হতে পারে যে কোনো কিছু।
প্রথম টেস্টে জয়ের জন্য পঞ্চম দিনে পাকিস্তানের প্রয়োজন ৮৩ রান, শ্রীলঙ্কার চাই ৭ উইকেট।
১৩১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় সফরকারীরা বুধবার চতুর্থ দিন শেষ করেছে ৩ উইকেটে ৪৮ রান নিয়ে।
শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংস থামে এ দিন ২৭৯ রানে। প্রথম ইনিংসে ১৪৯ রানে এগিয়ে থাকায় পাকিস্তানের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় তাই ছোট।
ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও পারেননি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। প্রথম ইনিংসে ১২২ রানের পর এবার তিনি করেন ৮২। তার ১১৮ বলের ইনিংসে ১০ চারের পাশে ছক্কা ২টি। ফিফটি এসেছে ওপেনার নিশান মাদুশকার ব্যাট থেকেও।
টার্নিং উইকেটে রান তাড়ায় তৃতীয় বলে আবদুল্লাহ শফিক চার মারলেও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। বাঁহাতি স্পিনার জয়াসুরিয়ার বলে কট বিহাইন্ড হন তিনি। বল আটকে যায় কিপারের দুই পায়ের মাঝে।
প্রথম ইনিংসে আগ্রাসী ব্যাটিং করা শান মাসুদও এবার টেকেননি। জয়াসুরিয়াকে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় তিনি ধরা পড়েন শর্ট লেগে।
‘নাইটওয়াচম্যান’ হিসেবে নেমে নুমান আলি ফেরেন রান আউটে। ৩৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান।
দিনের বাকি দুই ওভারে আর কোনো বিপদ হতে দেননি ইমাম-উল-হক ও বাবর আজম। ইমাম ২৫ ও অধিনায়ক ৬ রানে খেলছেন।
গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা চতুর্থ দিনের ব্যাটিং শুরু করে বিনা উইকেটে ১৪ রান নিয়ে। দিমুথ করুনারত্নে এ দিন আর বেশিদূর এগোতে পারেননি। লেগ স্পিনার আবরার আহমেদকে আলগা শটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি ২০ রান করে।
এরপর নিয়মিত কয়েকটি উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। কুসাল মেন্ডিস ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসও পারেননি ইনিংস টেনে নিতে। দুজনকেই ফেরান বাঁহাতি স্পিনার নুমান। মেন্ডিস হন এলবিডব্লিউ, প্রথম স্লিপে ম্যাথিউসের দারুণ ক্যাচ নেন বাবর।
এক প্রান্ত আগলে রেখে মাদুশকা ফিফটি পূর্ণ করেন ১০৮ বলে। এরপর বেশিদূর যেতে পারেননি এই ওপেনার। তাকে কট বিহাইন্ড করে তৃতীয় শিকার ধরেন নুমান।
৯৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ৬০ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন ধনাঞ্জয়া ও সাদিরা সামারাবিক্রমা। যেখানে বেশিরভাগ রানই ধনাঞ্জয়ার।
শর্ট লেগে শফিকের দুর্দান্ত ক্যাচে কিপার-ব্যাটসম্যান সামারাবিক্রমা বিদায় নেন ১১ রান করে। এরপর সপ্তম উইকেটে ইনিংস সেরা ৭৬ রানের জুটিতে দলের স্কোর আড়াইশ পার করেন ধনাঞ্জয়া ও রমেশ মেন্ডিস।
মাথা ব্যথার কারণ হয়ে ওঠা জুটি ভাঙেন আবরার। ৭৯ বলে ৪২ রান করে এলবিডব্লিউ হন মেন্ডিস। সঙ্গীকে হারালেও শতরানের পথেই ছুটছিলেন ধনাঞ্জয়া। শাহিন শাহ আফ্রিদিকে মারেন পরপর দুটি চার। এরপরই বাঁহাতি পেসারের দারুণ এক ডেলিভারিতে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন তিনি। শ্রীলঙ্কার ইনিংসও আর বেশিদূর এগোয়নি।
৩টি করে উইকেট নেন আবরার ও নুমান। আফ্রিদি ও সালমানের শিকার ২টি করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৩১২
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৪৬১
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: (আগের দিন ১৪/০) ৮৩.১ ওভারে ২৭৯ (মাদুশকা ৫২, করুনারত্নে ২০, কুসাল মেন্ডিস ১৮, ম্যাথিউস ৭, চান্দিমাল ২৮, ধনাঞ্জয়া ৮২, সামারাবিক্রমা ১১, রমেশ মেন্ডিস ৪২, জয়াসুরিয়া ১০, বিশ্ব ০*, রাজিথা ৫; আফ্রিদি ১৩-০-৬৪-২, নাসিম ১২-২-৩২-০, সালমান ৯-০-৩৯-২, আবরার ২৪.১-৫-৬৮-৩, নুমান ২৫-৫-৭৫-৩)
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৩১) ১৫ ওভারে ৪৮/৩ (শফিক ৮, ইমাম ২৫*, মাসুদ ৭, নুমান ০, বাবর ৬*; বিশ্ব ২-১-৬-০, রমেশ মেন্ডিস ৭-১-২৩-০, জয়াসুরিয়া ৬-০-১৭-২)