Published : 09 May 2023, 12:55 PM
ম্যাচের পর ম্যাচ পেরিয়ে গেল, মৌসুম প্রায় শেষ হতে চলল। অথচ আন্দ্রে রাসেল যেন ঘুমিয়ে! মাঝেমধ্যে একটু মাথাচাড়া দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে আবার ধপাস। অবশেষে জেগে উঠলেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। চেনা চেহারায় ফিরে অবদান রাখলেন দলের জয়ে। তাতে স্বস্তি পাচ্ছেন নিতিশ রানাও। কলকাতা অধিনায়ক জানালেন, একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থতার পরও তিনি ভরসা রাখছিলেন রাসেলের সামর্থ্যে।
ইডেন গার্ডেনসে সোমবার পাঞ্জাব কিংসের ১৭৯ রান টপকে যেতে শেষ ৪ ওভারে ৫১ রান দরকার ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের। কঠিন এই সমীকরণ সহজ হয়ে আসে রাসেলের ব্যাটিংয়ে। দারুণ কিছু শট খেলে তিনি সমীকরণ নিয়ে আসেন নাগালে। আরেকপাশ থেকে রিঙ্কু সিংও ভুমিকা রাখেন কিছুটা। শেষ ২ ওভারে যখন প্রয়োজন ২৬ রান, স্যাম কারানের ওভারে তিন ছক্কায় ম্যাচ সহজ করে দেন রাসেল।
এরপরও অবশ্য নাটকীয়তা ছড়ায় শেষ ওভারে। ৬ বলে ৬ রান নিতে গিয়ে ভুগতে হয় কলকাতাকে। শেষ বলের আগে রাসেল রান আউট হয়ে যান। শেষ বলে প্রয়োজন পড়ে ২ রানের। চার মেরে দলকে জিতিয়ে ইডেনের গ্যালারি উত্তাল করে তোলেন রিঙ্কু।
তিনটি করে চার ও ছক্কায় ২৩ বলে ৪২ রান করে ম্যাচের সেরা রাসেলই।
চলতি মৌসুম শুরু করেছিলেন তিনি ১৯ বলে ৩৫ রানের ইনিংসে। পাঞ্জাবের বিপক্ষে সেদিন দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। আউট হয়ে যান ওই কারানের বলেই। এরপর গোটা মৌসুমে অনেকটা অচেনা হয়েই ছিলেন তিনি। সোমবারের ম্যাচের আগে ৩০ ছুঁতে পেরেছিলেন স্রেফ দুই ইনিংসে। একটিতে করেন ৩১ বলে অপরাজিত ৩৮, আরেকটিতে ১৯ বলে ৩৪। তবে ওই দুই ম্যাচেও হেরে যায় দল।
সব মিলিয়ে স্ট্রাইক রেট দেড়শ হলেও তার মোট রান ছিল ১০ ইনিংসে মোটে ১৬৬। বল হাতে তো এবার তিনি আরও অকার্যকর। গোটা মৌসুমে স্রেফ ৭টি উইকেট নিতে পেরেছেন ওভারপ্রতি ১১ রানের বেশি দিয়ে।
সোমবার পাঞ্জাবের বিপক্ষেও ১ ওভার বোলিংয়ে রান দেন ১৯। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিংয়ে তা পুষিয়ে দিতে পারলেন।
ম্যাচের পর কলকাতা অধিনায়ক নিতিশ বললেন, ম্যাচের পর ম্যাচ রাসেল নিজেকে হারিয়ে খুঁজলেও তাকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করে গেছেন তিনি।
“১০ ম্যাচ পেরিয়ে গেছে, আমরা সবাই অপেক্ষায় ছিলাম রাসেলের সেই একটি ইনিংসের। স্রেফ একটি ইনিংসই প্রয়োজন ছিল তার (নিজেকে ফিরে পেতে)। আমি তার ওপর ভরসা রাখছিলাম। বারবার তাকে বলছিলাম, ‘তুমি অনেকবারই করেছো, শতভাগ নিশ্চিত যে এবারও তুমি ম্যাচ জেতাতে পারবে।’ আজকে সকালেও সে বোলিং অনুশীলনের সময় তাকে বলেছিলাম যে, স্রেফ একটি ইনিংস দরকার তার। সেই ইনিংস অবশেষে সে খেলতে পারল।”
ইডেনের উইকেটে এ দিন বল একটু থমকে আসছিল। তবে শেষ দিকে ঝড় তোলার প্রয়োজন হলে তা পারার বিশ্বাস ছিল বলে ম্যাচ শেষে দাবি করলেন রাসেল।
“আমরা আলোচনা করছিলাম যে বল একটু গ্রিপ করছে। আমাদের চেষ্টা ছিল লড়াই জিইয়ে রাখার এবং আশা করেছিলাম যে তারা ইয়র্কারের চেষ্টায় গড়বড় করবে, লেংথ মিস করবে। জানতাম যে ২ ওভারে ৩০ রান প্রয়োজন হলেও তা করা সম্ভব।”
“যদিও তাদের ডেথ বোলিং বেশ ভালো, আমাদের ওপর চাপ ছিল বড় শট খেলার। তবে নিজেদের সামর্থ্যে আমাদের ভরসা ছিল। খুবই ভালো লাগছে যে আজকে সবকিছু কাজে লেগেছে এবং আমরা পেরেছি।”