Published : 09 Jun 2024, 10:48 PM
মায়ের কাছ থেকে যমজ দুই নবজাতক চুরির অভিযোগ আসার পর চট্টগ্রামের দুই জায়গা থেকে শিশু দুটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ছয় মাস আগে চট্টগ্রামে বেসরকারি একটি হাসপাতাল থেকে যমজ এ দুই নবজাতক ’চুরির’ অভিযোগে সম্প্রতি আদালতে অভিযোগ করেন এক নারী। সেটির তদন্তে নেমে গত শনিবার শিশু দুটিকে উদ্ধার করে পিবিআই।
চট্টগ্রামে এ ইউনিটের পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা বলেন, শিশু দুটিকে উদ্ধারের পর তদন্ত কর্মকর্তারা জানতে পারেন অভিযোগকারী মা নিজেই টাকার বিনিময়ে গর্ভাবস্থায় নবজাতক দুটিকে দত্তক দেওয়ার সমঝোতা করেছিলেন। সেই অনুযায়ী ৩ জানুয়ারি সন্তান জন্মের পর তাদের দিয়েও দেন।
পরে স্বামীর সঙ্গে টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে আদালতে মামলা করেন।
রোববার পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরে নাঈমা সুলতানা বলেন, শনিবার নগরীর অক্সিজেন ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা থেকে শিশু দুটিকে উদ্ধার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. শাহেদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ”বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আমাদের তদন্তে শিশু চুরির কোনো প্রমাণ পাইনি। আজকে দুই শিশুকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছিল।
আদালত দুই শিশুকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি সোমবার দুই পক্ষকে আদালতে হাজির করতে বলেছে।”
সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা বলেন, সম্প্রতি যমজ (একটি ছেলে ও একটি মেয়ে) শিশু দুটির মা মুন্নী আক্তার নিজের স্বামী এবং বেসরকারি একটি হাসপাতালের দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মানবপাচার ট্রাইবুন্যালে অভিযোগ করেন। আদালত অভিযোগটি পিবিআই, চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়কে তদন্তের আদেশ দেয়।
তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি বলেন, অভিযোগকারী মুন্নী আক্তার বাবুর্চির সহকারী হিসেবে কাজ করেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। গত ৩ জানুয়ারি একটি বেসরকারি হাসপাতালে যমজ সন্তান প্রসব করেন।
“সন্তান গর্ভাবস্থায় থাকার সময় তিনি দুই নারীর কাছে ছেলে সন্তানটি তিন লাখ টাকায় এবং মেয়ে সন্তানটি এক লাখ টাকায় বিক্রি করতে রাজি হন। মুন্নী আক্তারের সঙ্গে দত্তক নিতে আগ্রহী দুই নারীর পরিচয় করিয়ে দেন রাশেদ বেগম নামের একজন। এতে সম্মতি ছিল মুন্নী আক্তারের স্বামীরও।”
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার কিছু দিন পর মুন্নীর স্বামী হাবিবুর রহমান তার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আদালতে অভিযোগ করেন।
দুই সন্তানকে দত্তক দেওয়ার মধ্যস্ততা হিসেবে রাশেদা এক লাখ টাকা পায় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।